Book Review : (06)
#অপেক্ষা
__হুমায়ূন আহমেদ
(প্রকাশ :১৯৯৭)
আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি উপন্যাস। বইটি হয়ত অনেকেই পড়া, কিন্তু আমার এই প্রথম।
#চরিত্র:
১.ইমন: গম্ভীর, বুদ্ধিমান মেধাবী ছাত্র।
২.সুফিয়া: (মা) ; প্রথমে শান্ত স্বভাবে হলেও অপেক্ষার প্রহরে খিটমিটে হয়ে উঠে।
৩. হাসান: (বাবা) ; যার জন্য এত কিছু।
৪.ফিরোজ : (ছোট চাচা); বেকার তবে দায়িত্বশীল।
৫.সুপ্রভা: ইমনের ছোট বোন
৬. জামিলুর রহমান : (সুফিয়ার ভাই); ধনী ব্যবসায়ী।
৭. মিতু: (মামাতো বোন); ইমনের সাথে বিয়ে।
৮. ফাতেমা : ( মামী) বোকা, সহজ সরল।
৯. টোটন ও শোভন: জামিলের ছেলে, সন্ত্রাসী হয়ে উঠে।
১০. মুন্নী : গায়ে পড়া গোছের।
১১. আকলিমা বেগম: ইমনের দাদী (বৃদ্ধা)
## সুফিয়ার দিনকাল ভালোই যাচ্ছিল। অনেক শান্ত স্বভাবের বাড়ির বৌ টি সুখেই ছিল। একদিন তার স্বামী, হাসান, অফিস থেকে ফেরে না। সুফিয়া চিন্তায় ভেঙ্গে পড়ে, বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় হাসান সাহেবের জন্য অপেক্ষা। ইমনকে ছোট চাচা, ফিরোজ, অনেক ভালবাসে। আদর করে ডাকে হার্ড নাট। কারণ, ইমন খুব ছোট থেকেই গম্ভীর ও বুদ্ধিমান। এই দুর্দিনে সুফিয়ার একটা মেয়ে হয়, নাম সুপ্রভা। মা তার যত্ন নেয় না অপয়া বলে। সে হয়ে উঠে খিটখিটে স্বভাবের। ফিরোজ বেকার,তাই সুফিয়ার চলার কষ্ট হচ্ছিল। একদিন সুফিয়া তার ভায়ের বাসায় চলে যায়। অন্যের ঘাড়ে পড়লে একটু আধটু বাঁকা কথা সহ্য করতেই হয়। ইমন স্কুলে যায়। ছোট চাচা মাঝে মাঝেই দেখতে আসত, সুফিয়া সেটা দেখতে পারত না। আসলে সে তার স্বামীকে ভুলতে পারে না। টোটন,শোভন ও মিতুর সাথে ইমনের দিন চলে যেত। কিন্তু, বেশিরভাগই সে একা থাকত। আকলিমা বেগমের মুমূর্ষু অবস্থায় ফিরোজ তাদের নিতে আসলে সুফিয়া খেপে গিয়ে না করে দেয়। সুপ্রভা বড় হচ্ছে, বেশ সুন্দর হয়েছে,ভালো গান পারে,তবে ছাত্রী ভালো না। মামা তাকে খুব ভালোবাসে। মামার কাছে কোক চাইতে অফিসেও চলে যেত। তাই মামা অফিসে ফ্রিজ ভর্তি করে কোক রেখে দিত। ফিরোজ বিদেশে চলে যায়,কিন্তু, প্রায়ই চিঠি লিখত হার্ড নাটকে। একদিন পরীক্ষায় ফেল করে ও প্রমোশন পাবে না কেঁদে কেঁদে বাসায় বললে মা রাগ করে ছাদ থেকে লাফ দিতে বলে। সে সম্মোহিতের মতো তাই করে বসে। সুপ্রভা নামটি মুছে যায়। মেয়েটির অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। মিতু ইমনকে বেনামি চিঠি দিত। মনে মনে ভালবেসে ফেলেছে। ইমনও হয়ত তাই। ফাতেমার সাথে তর্কে সুফিয়া একদিন অন্য জায়গায় বাসা নেয়। সেই বাসার মেয়ে মুন্নীকে ভালো লাগত তার। ইমনের সাথে বিয়েও দিতে চায়, কিন্তু, ইমনের মেয়েটিকে রক্ষী ভাবে। শোভন খুনের দায়ে ৩ বছর জেল থেকে ফিরে আরেকটা খুন করে ইমনের সামনে। ইমন সাময়িক স্মৃতি হারায়। শোভনের সাথে থেকে একবার মদও খেয়েছিল। ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্রটি ভবঘুরে হয়ে পড়ে, তার অনার্সের ফাইনাল পরীক্ষা দেয় না। সুফিয়া তার প্রথমকার বাড়িটা ভাড়া নেয়। আবার সাজিয়ে তুলে আগের মতো করে। মিতু তার ঠিক হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে বাবাকে প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করতে চায় ইমনকে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। বাসর রাত তাদের। একদিন তাদেরও এমন দিন এসেছিল। সুফিয়া আজও অপেক্ষা করছে হাসান সাহেবের জন্য। স্বপ্ন দেখেছিল ইমনের বিয়ের রাত্রে সে ঘরে ফিরবে। আকলিমা বেগমের জায়গাটিতে এখন সুফিয়া শুয়ে আছে। মানুষের জীবন যেন চক্রের মতো। এমন সময় দরজায় কড়া নড়ে উঠল। হাসান আসল বলে সুফিয়া আতকে উঠল। কিন্তু, দরজা খোলার সাহস পায় না।
আসলে প্রতিটি মানুষই অপেক্ষা করছে। সে কিসের অপেক্ষা? আকাঙ্ক্ষার? নাকি মৃত্যুর?
©Mithun
No comments:
Post a Comment
Never share any links or personal information. Keep your privacy strong.