Thursday, May 28, 2020

The The Vinci Code___Dan Brown_in Bangla

দ্য দা ভিঞ্চি কোড

ড্যান ব্রাউন

আমেরিকান জনপ্রিয় লেখক ইতিহাস অবলম্বনে রচনা করেন এক সুদীর্ঘ উপন্যাস। তুলে এনেছেন প্রাচীন প্যাগান ধর্মের কথা। প্রায়রী অব সাইয়ন ও ভ্যাটিকানের অঙ্গসংগঠন ওপাস দাইয়ের মধ্যে বিবাদ। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির চিত্রকর্ম। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ল্যাংডন ,সফি নেভু, ল্যুভর মিউজিয়ামে কিউরেটর জ্যাক সনিয়ের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত । ভ্রাতৃসংঘের গোপন রহস্য এক চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি করে।

ব‌ইটি ডাউনলোড করতে Click here

Saturday, May 23, 2020

এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস ___ড্যান ব্রাউন

Book Review: (15)

এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস 

___ড্যান ব্রাউন 



# অত্যন্ত জনপ্রিয় ব‌ই এটি। তৃতীয় বারের মতো রিভাইজ শেষ। ইতিহাস,রহস্য আর থ্রিলিং মিলিয়ে এক অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি আরেকটি বিখ্যাত ব‌ই লিখেছেন, #দ্য_দা_ভিঞ্চি_কোড ( ল্যুভর মিউজিয়ামে ভ্রাতৃ সংঘের রহস্য নিয়ে লেখা ) । যেখানে আছে রবার্ট ল্যাংডন, মিউজিয়ামের কিউরেটর জ্যাক সনিয়ে, নাতনি সফি , ক্যাপ্টেন বেজু ফসে ) । সত্য ঘটনাকে রংচং দিয়ে উপস্থাপন করেছেন তিনি এই ব‌ইটিতে। ২০ নং রিভিউতে থাকবে সেটা।

চরিত্র :

১.প্রফেসর রবার্ট ল্যাংডন: বিখ্যাত সিম্বলজিস্ট । লেখা ব‌ই The art of Illuminati (part 1 and part 2)
২. ইন্সপেক্টর জেনারেল অলিভিয়াটি ৩.কমান্ডার রিখটার
৪. মিস ভিট্টোরিয়া ভেট্রা
৫.ফাদার প্যাট্রিক : পোপের অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্বে।
৬.কার্ডিনাল স্ট্রাউস : পোপ নির্বাচক।

মূল কাহিনী:

বিজ্ঞানমনস্ক দের সাথে চার্চের বিবাদ বহুদিনের। রোমে সমগ্র বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মের পোপের মৃত্যু হয় । এইজন্য পোপ নির্বাচনের জন্য সমগ্র পৃথিবী থেকে এসেছে পবিত্র ধর্মগুরুরা। টানা নয়দিন শোক দিবস (Say day) পালন শেষে কার্ডিনাল স্ট্রাউসের নেতৃত্বে ধর্মগুরুরা গোপন বৈঠকে বসেছে পোপ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু পদপ্রার্থী ৪ ধর্মগুরুরা এখনো নিখোঁজ। তার জন্যই ডাক পড়লো বিখ্যাত সিম্বলজিস্ট প্রফেসর ল্যাংডনের।
তার কাছে পাঠানো দূত একটা নকশা নিয়ে আসে। ল্যাংডন বুঝে সেটি এম্বিগ্রামে ছাপা । এটি এমন একটি লিখন পদ্ধতি যা সোজা কিংবা উল্টো যেদিক থেকেই পড়া হোক না কেন এক‌ই অর্থ দাঁড়ায়। এটি ইলুমিনাটিদের তৈরি যা গ্যালিলিওকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। ইলুমিনাটি অর্থ The enlighten one বা জ্ঞানী। গ্যালিলিও নিজেও ইলুমিনাটির সদস্য ছিল। তিনি তৈরি করেছিলেন Path of Illumination যা একটি গুপ্তপথ যেটি রোমের ভেতর দিয়ে চার্জ অব ইলুমিনেশন পর্যন্ত গিয়েছে । যারা এই পথের সমাধান করতে পারত তাদেরকেই ইলুমিনাতির সদস্য করে নেয়া হতো। গ্যালিলিও চেয়েছিল ধর্ম ও বিজ্ঞানের মিলন, কোনো বিবাদ নয়। ১৬৬৮ সালে চার ইলুমিনাটিকে চার্জ গরম লোহা বিদ্ধ করে হত্যা করে। তা থেকে জন্ম নেয় এক হিংসাত্মক ইলুমিনাটি সমাজের। তারা ৪ ধর্মগুরুকে অপহরণ করে, একটি বার্তা পাঠায় , " চারটি স্তম্ভ ধ্বংস করে দেবে,  ধর্মগুরুদের বুকে ইলুমিনাতির ছাপ ফেলবে, ভ্যাটিকান সিটিকে আলোয় গ্রাস করবে।" ল্যাংডন বার্তার অর্থোদ্ধার করে,চার স্তম্ভ= চার গর্মগুরু; ইলুমিনাটির পাঁচ চিহ্ন; আলোয় গ্রাস= বিস্ফোরক। মিস ভিট্রার তথ্য অনুযায়ী লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডের কোন স্থানে একটি এন্টিমেটার আছে যেটার ক্যানিস্টার চার্জ ফুরিয়ে নিচের অংশ স্পর্শ করে ফেলে ভয়ানক বিস্ফোরণে ভ্যাটিকান ধ্বংস হয়ে যাবে। ইলুমিনাটির পাঁচটি চিহ্ন হচ্ছে, Earth, Air, Water, Fire & Last one is unknown yet. ৯ম পোপ পায়াস ১৮৮৭ সালে চার্চে রাখা নগ্ন মূর্তি মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে সেগুলোকে নপুংসক বানিয়ে ফেলে । ল্যাংডন , ফাদার প্যাট্রিকের অনুমতি নিয়ে মিস ভেট্রাকে নিয়ে ভ্যাটিকান আর্কাইভে যায় গ্যালিলিওর তৃতীয় ব‌ই খুঁজতে। ইলুমিনাটির এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত 5D3 । Where, 5 =meaningful number, D= Diagrama-3 । গ্যালিলিও তিনটি ব‌ই লিখে গেছেন। ১. Dialogo ( সৌর জগৎ ও পৃথিবী নিয়ে অনেক সত্য তুলে ধরেন) ২. Discorsor ( এই ব‌ইতে চার্চের চাপে ১ম ব‌ইয়ের সবকিছুকে অমূলক বলেন) ৩. Diagramma Della Verita ( তার চূড়ান্ত বিচার ও সিদ্ধান্ত রেখে যান) । কোড অনুযায়ী ৫ নং পৃষ্ঠায় ক্লু থাকার কথা। সন্ধান পায় বার্নিনির ডিজাইন করা স্যান্টির ( শিল্পী রাফায়েল) বানানো সেন্টামারিয়া দেলপোপোলো ( পৃথিবীর প্রার্থণালয় )। পৃথিবী প্রথম ক্লু। সেখানে এঞ্জেল এন্ড ডেমনসের মূর্তি । যেখানে প্রথম কার্ডিনালের খুন, বুকে এম্বিগ্রামের ছাপ Earth । এঞ্জেলের হাতের আঙুল দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নির্দেশ ( সেন্ট পিটার্স্কয়ারের দিকে) । সেখানেই বায়ু সম্পর্কিত ২য় মূর্তি "এঞ্জেল"। তার মুখের হাওয়া পূর্ব দিক ব‌ইছে। অর্থাৎ পশ্চিমে বার্নিনির বানানো কোন মূর্তি থাকবে। ২য় ধর্মগুরুও মারা যায় , বুকে Air । পশ্চিমে গিয়ে সেন্টামারিয়া ডেলাভিটোরিয়াতে পায় ফেরাফিম অর্থাৎ আগুনের সাথে সম্পর্কিত মূর্তি " স্ট্যাচু অব সেন্ট টেরিজা"। ৩য় ধর্মগুরুর খুন ,বুকে ছাপ Fire । সময় বেশি নেই । ৪র্থ কার্ডিনালকে বাঁচাতেই হবে। তিনটি মূর্তিকে সরলরেখায় জুড়ে একটি হলি  ক্রস পায় , যেখানে চতুর্থটি। মূর্তির বল্লম এর ফলাও সেদিকেই নির্দেশ । পায় জলের সাথে সম্পর্কিত বার্নিনির বানানো " ফোর রিভার "। সেখানেই সেন্ট এঞ্জেলো জোসেল অর্থাৎ চার্চ অব ইলুমিনেশন অবস্থিত। রিখটার ল্যাংডনকে সাহায্য না করে চলে আসলে তাকে সন্দেহ করে। অলিভিয়াটি এবং ভেট্রাকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ৪ র্থ কার্ডিনালকে পায় । তার বুকেও  Water মার্ক। কিন্তু, সে তখনও জীবিত, হাসপাতালে নিয়ে যায়। রিখটার সব বুঝে যায়, তাই সে ফাদার প্যাট্রিকের ঘরে গিয়ে সব বলে দেয়। প্যাট্রিক চালাকি করে নিজের বুকেই ইলুমিনাটির ৫ম চিহ্নের ছাপ ফেলে। স্ট্রাউস ঘরে ঢুকেই দেখে রিখটার গুলি হাতে দাঁড়িয়ে। কিছু বুঝে উঠার আগেই সুইজ গার্ডের দুজন গুলি করে ইলুমিনাটি ভেবে। প্যাট্রিক তখন তার জানা জায়গা থেকে এন্টিমেটারটা নিয়ে হেলিকপ্টারে করে উপরে উঠে বিস্ফোরন ঘটিয়ে প্যারাসুটে নিচে নেমে আসে। সবাই তাদের যোগ্য ধর্মগুরুর সাহসিকতায় তালি দিতে থাকল। কিন্তু, রিখটারের বুদ্ধিতে ল্যাংডনের পকেটে রেখে যাওয়া , মোবাইলের রেকর্ডে সব ফাঁস হয়ে যায়। ফাদার প্যাট্রিকের আর পোপ হ‌ওয়া হলো না। সে নিজেই ইলুমিনাটির সদস্য ছিল। গায়ে আগুন দিয়ে মারা যায়। সেও বিজ্ঞান ও ধর্মের মিলন চেয়েছিল। বোঝাতে চেয়েছিল এরা পরস্পর বিরোধী নয়, বরং এক।

#বি_দ্র: ইলুমিনাটির ৫ম চিহ্ন কি তা তিনিও উল্লেখ করেননি।

©Mithun

Thursday, May 21, 2020

অরক্ষণীয়া __ শর‌ৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

Book Review: (14)

অরক্ষণীয়া

__ শর‌ৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়


চরিত্র:


১. অতুল:  শিক্ষিত, অসুস্থে জ্ঞানদা তাহার সেবা করিয়া সারিয়া তুলে, ভালবাসে। স্বর্ণার মামাতো ভাই।
২. জ্ঞানদা: কুশ্রী , কালো, বেটে, ভদ্র, সহিঞ্চু মেয়ে।

# ৩ ভাই ও বৌ:
* গোলকনাথ (বড়), মৃত : বৌ- স্বর্ণা : নির্দয়, হিংসুটে, নিঃসন্তান।
* প্রিয়নাথ (মেজো), মারা যায়, মেয়ে-জ্ঞানদা, বৌ- দূর্গা মনি: গরিব ,সহিঞ্চু , হতভাগী।
*অনাথ (ছোট) , মেয়ে-মাধুরী; ছোট বৌ: অলস, নিরব, আরাম প্রিয়।
৪.মাধুরী: সুন্দর, শিক্ষিত, আনাড়ী।
৫. শম্ভু চ্যাটার্জী: হরিপালে থাকে। দূর্গার বড় ভাই।
৬. ভামিনী (পোড়াকাঠ) : ম্যালেরিয়ায় পোড়া কাঠ। তবে আতিথেয় প্রবন।


মূল কাহিনী:


অতুলের দূরারোগ্য রোগে তখন কেউ কাছেও যেত না তখন জ্ঞানদা তার সেবা করিয়া সুস্থ করিয়া তুলিয়াছিল। সেই থেকে অতুল তাহাকে ভালবাসিয়াছে। কলিকাতা হ‌ইতে দু গোছা চুড়ি আনিয়া উপহার দেয় তাকে । পিতার মৃত্যুর দিন অতুল প্রিয়নাথকে কথা দিয়াছিল তার মেয়ের ভার সে নিয়া ল‌ইল। স্বামী হারিয়ে অনাথের ঘাড়ে পড়া দূর্গা ও মেয়ে দু বৌয়ের নানা নির্যাতন সহ্য করিত। অনাথের রান্নাও তাহার করিতে হ‌ইত। তাহার উপর নানা ঝাঁঝালো কথা। একদিন মেয়ে ল‌ইয়া হরিপালে বাবার ভিটায় ভাই শম্ভু চ্যাটার্জীর বাড়িতে গিয়া উঠে। ভামিনী তিক্ত কথা বলিলেও সে দয়ালু ছিল। শম্ভু অনূড়া মেয়ের বিবাহ দিতে চায় তার পরিচিত এক দুঃশ্চরিত্র বৌ মেরে ফেলা বুড়ো পাত্রের কাছে, যাহাতে তাহার কট দেওয়া জমি ছুটাইয়া ল‌ইতে পারে। জ্ঞানদার ম্যালেরিয়া হয়। জ্বরে কালো মুখ আরো কালো, মাথার চুল উঠে যাইয়া কুশ্রীতর হ‌ইয়া উঠিয়াছে। দাদার ঠিক করা পাত্রের কাছে দূর্গা তাহার মেয়েকে দেবে না এবং পাত্রের তাহার ঠিক করাই আছে বলিয়া স্বামীর ভিটায় আসিয়া উপস্থিত হয়। শুরু হয় আবার সেই অন্তর ছিদ্র করা স্বর্ণার কথার ঝাঁঝ। দূর্গা চিন্তায় অসুস্থ হ‌ইয়া উঠে। অতুল তাহার দেওয়া কথা ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া বিয়ে ঠিক হয় অনাথের মেয়ে, মাধুরীর সাথে। ছোট বৌ তাহাদের কষ্ট বুঝিত, কিন্তু প্রতিবাদ করিত না। অতুল তাহার মেয়েকে বিবাহ করুক এটা এটা সেও সমর্থন করিত না। অনাথ জ্ঞানদাকে বিদায় করিতে সব বুড়ো, অপাত্র আনিতে থাকে। কিন্তু, জ্ঞানদার কুশ্রীতে তাহারা নিন্দা করিয়া চলিয়া যাইত। এমন বিশ্রী মেয়ে সকলের‌ই চক্ষুশূল হ‌ইয়া পড়ে। অসুস্থ মা অসহ্য হ‌ইয়া উঠিয়া মেয়ের মৃত্যু কামনা করিয়া উঠিল। জ্ঞানদা তাহাও সহ্য করিয়া যায়। মরিতে সেও চায় ,কিন্তু অসুস্থ মাকে একা রেখে যেতে পারে না। একদিন এসব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাইয়া পরলোকগমন করে দূর্গা। চিতায় আগুন দিতে সকলেই একত্রিত হ‌ইয়াছিল। অতুল‌ও আসিয়াছে। জ্ঞানদার চোখের পানি শুকাইয়া অন্তর কাঠ হ‌ইয়া গিয়াছে। গিয়ে নদীর ধারে মুখ ফিরাইয়া বসিয়া র‌ইল। অতুলের মনে চিতার আগুনে ভাসিয়া উঠিল তাহার সেই দূর্দিনের কথা। যেদিন তাহার পাশে কেউই ছিল না। একমাত্র ঐ কুশ্রী মেয়েটিই ছিল । এতদিন সেই মেয়েটি তাহার জন্য অপেক্ষা করিয়া,  অনেক লজ্জা বিলাইয়া দিয়া অনেক অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করিয়া আসিয়াছে। আর সহ্য না করিতে না পারিয়া জ্ঞানদা তাহার অন্তরের মধ্যে পুশিয়া আসা আশা টাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া অতুলের দেয়া চুড়ি গুছা দুটো তাহার সামনেই ভাঙ্গিয়া চলিয়া আসিল। অতুল তাহাই কুড়িয়া আনিয়া মুঠো ভরে জ্ঞানদার সম্মুখেতুলিয়া ধরিয়া ক্ষমা চাইয়া তাহাকে সাথে করিয়া বাড়ি ল‌ইয়া চলিল। মুখপোড়া মেয়েটির মুখ যেন রাঙ্গা হ‌ইয়া উঠিয়াছে।

©Mithun

Thursday, May 14, 2020

ক্যাপ্টেন টমসনের গুপ্তধন ___সৌরভ মুখোপাধ্যায়

Book Review: (13)

ক্যাপ্টেন টমসনের গুপ্তধন 

___সৌরভ মুখোপাধ্যায়



চরিত্র:

১.ক্যাপটেন টমসন : গ্রীন অলিভস জাহাজ
২.কটেজ :রাজপ্রতিনিধি-১
৩. বিলবার্ডি: রাজপ্রতিনিধি-২
৪. ফ্র্যাঙ্ক কিটিং: ইংরেজ জাহাজের ক্যাপ্টেন
৫. বেনিটো: জলদস্যুদের জাহাজের ক্যাপ্টেন

মূল কাহিনী:

দেশে যুদ্ধাশঙ্কায় ক্যাপ্টেন টমসন ইউরোপের পেরুর বিপুল গুপ্তধন তার জাহাজে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্ডার পায় রাজার কাছ থেকে। গন্তব্য লিমা দ্বীপ। এজন্য প্রচুর টাকা পাবেন টমসন। আর গুপ্তধনের কথা তার কাছে গোপন রাখা হয় সাথে রাজার বিশ্বস্ত রাজপ্রতিনিধি দেয়া হয়। নির্ধারিত দিনে জাহাজ ছাড়লো । ঐ দুইজন রাজ প্রতিনিধি ছাড়া কেউই জানে না জাহাজের বাক্সগুলোতে কি আছে। বেশ কয়েকদিন চলার পর টমসন দুষ্টবুদ্ধি আটে, সে রাজপ্রতিনিধিদের মদের নেশায় চুর করে সব গুপ্তধনের সন্ধান জেনে যায় । লোভের তাড়নায় তাদের দুজনকে খুন করে বাকি মাঝি-মাল্লাদের‌ও হত্যা করে সলিল সমাধি সারে। তারপর সব স্বর্ণসহ জাহাজ নিয়ে "খোকস" দ্বীপে গিয়ে উঠে। সেখানে একটা গুহার মধ্যে সমস্ত গুপ্তধন রেখে মাটি চাপা দিয়ে তার উপর গাছ লাগিয়ে, ইউরোপের দিকে রওনা দেয় । গ্রীন অলিভ জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। ছোট্ট একটা নৌকায় করে ফিরতে থাকে, যেন গিয়ে বলতে পারে যে তার জাহাজ পানিতে ডুবে সবাই মারা গেছে সে শুধুমাত্র বেঁচে ফিরতে পেরেছে। পরে ধীরে ধীরে সে সম্পদ নিয়ে যাবে। সে ভাসতে-ভাসতে একটা জাহাজ দেখতে পায় সামনে। খুশি হয়ে তাতে গিয়ে ওঠে কিন্তু হায়! এটা জলদস্যুদের জাহাজ । জলদস্যুদের জাহাজের ক্যাপ্টেন, বেনিটো, সমস্ত কিছু জানতে চায় আর তার ধূর্ততার কাছে মৃত্যু ভয়ে সব বলে দিতে বাধ্য হয়় । তাকে নিয়ে আবার সেই "খোকস" দ্বীপে যায়। তারা গিয়ে গুহাটি সন্ধান দিতে বলে কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে যায় টমসন। নিরাশ হয়ে জলদস্যুদের জাহাজ চলে যায় । সে বেরিয়ে এসে একটা গাছের গুড়ির ভেলায় চড়ে আধমরা হয়ে সমুদ্রে ভাসতে থাকে। লবন পানিতে পায়ের ক্ষতস্থানে ঘা ধরে গেছে। এমন অবস্থায় মুমূর্ষু টমসনকে দেখতে পেয়ে ইংরেজ জাহাজ তাকে উঠিয়ে নেয়। দীর্ঘদিন অনাহারে, পিপাসায় এতটাই ভেঙে পড়েছে যে তার দিকে আর তাকানো যায় না। সে বদ্ধ পাগল হয়ে যায় ভুলে যায় তার ধন-ভান্ডারের কথা । বৃদ্ধ অবস্থায় ভবঘুরে হয়ে সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে থাকতো।মৃত্যুর আগে মনে পড়ে । মারা যাবার আগে সে একটা ম্যাপ একে যায় সমুদ্রের তীরে। মানুষ তার সংকেত বুঝতে পারে না। সমুদ্রের পানিতে সেই বালিয়াড়ীর ম্যাপ মিলিয়ে যায়। এভাবেই খোকস হয়ে  উঠলো গোপন বিপুল রত্নভাণ্ডারের দ্বীপ ।

©Mithun

কঙ্কাল দ্বীপের রহস্য ___আলফ্রেড হিচকক

Book Review: (12)

কঙ্কাল দ্বীপের রহস্য 

___আলফ্রেড হিচকক



চরিত্র:

 তিন গোয়েন্দা
১.পিট
২.বব ও
৩.জুপিটার
# দুই ডাকাত
৪.বেল ও
৫. জিম
৬. ক্রিস ( বালক ) : অসুস্থ বাবার চিকিৎসার টাকা জোগাতে গুপ্তধন খোঁজে।
৭. উইলবার্ট : দ্বীপের মালিক।

কাহিনী:

আফ্রিকার কাছে কঙ্কাল দ্বীপে মুভির কাজ করতে গিয়েছে আলফ্রেড হিচককের পাঠানো টিম । তার নেতৃত্বে ছিল ববের বাবা। হিচকক মুভিতে তিন গোয়েন্দার পার্ট আছে। তাই তাদের সেই দ্বীপে পাঠায় । কিন্তু যাওয়ার সময় ঘটে যায় এক ঘটনা। কঙ্কাল দ্বীপে যাওয়ার সময় এক আগন্তুক মাঝি তাদেরকে ভুল দ্বীপে নামিয়ে দিয়ে চলে আসে। তারা গন্তব্যে পৌঁছার পরিবর্তে আটকা পড়ে যায় সেখানে। সেখান থেকে কঙ্কাল দ্বীপে পৌঁছে ক্রিসের সহযোগিতায়। সেই থেকে তার সাথে বন্ধুত্ব হয় তাদের। ক্রিস তাদের দুরবস্থার কথা বলে । শুনে ওরাও ব্যথিত  হলো । দ্বীপে পৌঁছে সব ঘটনা বললে ক্রেস্টান রেগে যায়। সে ক্রিসকে দেখতে পারে না। দ্বীপের লোকজন কুসংস্কারাচ্ছন্ন । প্রত্যেক পূর্ণিমা রাতে দ্বীপে ভূত এর আগমন ঘটে এই ধারণায় কেউ ওই রাতে বাইরে বের হয়না। পিট , জুপিটার ও ববকে সাঁতার শেখায় ক্রিস। একদিন জুপিটারের জ্বর আসলে শেয়ার সাঁতার কাটতে জায় না। বব ও পিট নিয়মিত সমুদ্রে যেত। ক্রিস ভালো ডুবুরী। সে এক ডুবে অনেকক্ষণ থাকতে পারে পানির নিচে। পাশে একটা দ্বীপে বিয়ে গুপ্তধনের খোঁজ করে । ক্রিস একবার এক ডুবে একটা় স্বর্ণমুদ্রা তুলে আনে। পরের দিন‌ও আসে তারা। হ্যান্ড দ্বীপে ক্রিস প্রথমে কিছু না পেলেও একসময় একটা গুহার সন্ধান পায় পানির নিচে । তারা সেখানে যায় , গিয়ে যাকাত অন‌ইয়ারের গুপ্তধন পায় । গুহাটির মুখ বন্ধ করে চলে আসে। কথাটা যাতে যেন জানি না হয় তাই তারা চেপে যায় । এমন সময় একটা দ্রুতগামী স্পিডবোট এসে ক্রিসের ছোট নৌকাটাকে ভেঙে দিয়ে যায়। বব আর পিট ফিরতে দেরি হওয়ায় জুপিটার এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। এক রাতে দ্বীপের রহস্য ভেদ করতে জুপিটার তার সঙ্গীদের পাঠায় । রাতে চুপিচুপি জঙ্গল পেরিয়ে দ্বীপের মধ্যে লুকিয়ে দেখতে পায় তিনজন লোককে। অর্থ ভাগ্যের কথা হচ্ছিল।দ্বীপের প্রহরী, টম, তার অংশ কিছুতেই ছেড়ে দিবে না। তাই নিয়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় এমন সময় বেরিয়ে আসে পিট ও বব। আক্রমণ করে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়া ডাকাত বেল ও জিম তাদের রেখে যাওয়া গুপ্তধন নিতে এসেছে। বেল ও জিমের কাছে অস্ত্র ছিল তা দিয়েই ধরাশায়ী করে পিট ও ববকে , এমন সময় ক্রিস এসে তাদেরকে বাঁচায়। জুপিটার ইতিমধ্যে পুলিশ নিয়ে এসে অপরাধীদের ধরিয়ে দেয় ।

©Mithun


Monday, May 11, 2020

দি আলকেমিস্ট ___পাওলো কোয়েলো

Book Review: (11)

দি আলকেমিস্ট

 ___পাওলো কোয়েলো




#চরিত্র :

১.সন্টিয়াগো (রাখাল) : মেষ চড়াতো। বই পড়তে পারতো। স্বপ্ন , ভ্রমণ করবে । মাঝে মাঝে স্বপ্নে কিছু একটা দেখে যার অর্থ শোনার জন্য এক বৃদ্ধার কাছে যায়। সে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয় এমন যে,' সে মিশরের পিরামিডের কাছে গুপ্তধনের সন্ধান পাবে ।' কিন্তু তাকে একটি শর্ত দেয় ,তাকে তার  দশ ভাগের এক ভাগ দিতে হবে।
২. বৃদ্ধ রাজা: 6 টি ভেড়ার বিনিময়ে ২ টি পাথর দেয় ( যেগুলো তাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে )
৩.আলকেমিস্ট: বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন, শিক্ষিত, আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্ন।

মূল কাহিনী:

যুবক মেষ বিক্রি করে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু পথে প্রতারকের খপ্পরে পরে সব হারায়। এক রত্ন বিক্রেতার কাছে চাকরি পায় । মুসলিম রত্ন ব্যবসায়ীর সান্নিধ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। কাচের গ্লাসে চা বিক্রি করতে থাকে। ব্যবসায় নতুনত্ব আসায় অনেক লাভ হয় । সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিতে হবে । স‌ঙ্গ নেয় এক কাফেলায়। কিন্তু মরু বড় নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে। মরুদ্দ্যানের কাছে পৌঁছালে দুই গ্রুপের  মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায় । সেখানে তাদের বাধ্য হয়েই যাত্রা বিরতি করতে হয় । সেখানে কুয়োর কাছে পানি আনতে গেলে এক যুবতীর সাথে দেখা হয় । তারা প্রেমে পড়ে যায়।  এর আগেও এক বনিকের মেয়ের প্রেমে পড়েছিল । বালক দুটো বাজপাখির মারামারি পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যদ্বাণী করে যে, একদল সৈন্য সেই রাজ্য আক্রমণ করতে এগিয়ে আসছে। পূর্বাভাস পাওয়ায় যুদ্ধে জয়ী হয়। সেজন্য যুবক স্বর্ণমুদ্র উপহার ও সেখানে উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পায়। কিন্তু তার স্বপ্ন জয়ের জন্য তাকে ছেড়ে যেতে হয় । দেখা হয় এক ইংরেজ যুবক, যেও এক‌ই উদ্দেশ্যে এসেছে । একসময় দেখা হ়য় আলকেমিস্টের সাথে। আলকেমিস্ট হলো তারাই যারা পৃথিবীর ভাষা বোঝে অর্থাৎ সকল কিছুর অর্থ তারা বোঝে । যারা লোহাকে সোনাই রূপান্তরিত করতে পারে। আলকেমিস্ট তার পরীক্ষা নিয়ে সফল হলে, তাকে সে সাহায্য করতে রাজি হয় । তারা দুজন যাত্রা শুরু করে। পথের মধ্যে একদল সৈন্য আটকায় ও সেনাপ্রধানের কাছে নিয়ে গেলে তাদের শাস্তি দেয়, মৃত্যুদন্ড । তা থেকে বাঁচতে আলকেমিস্ট কথা দেয় , মানুষ বাতাসে পরিণত হয়ে তাদের তাবু উড়িয়ে দেবে। শিষ্য বাতাসের রূপধারণ করতে সক্ষম হয় ও শর্তানুযায়ী মুক্তি পায়। মিশরের কাছে পৌঁছে আলকামিস্ট একটি পাত্রে সীসা রেখে তাতে সোনায় পরিণত করে। যুবকের হারানোর উপহার / ক্ষতিপূরণ হিসেবে যুবক, সঙ্গী ও নিজে ৩ ভাগ করে নেয়। যুবক পিরামিড দেখতে পায় ও একটি জায়গায় শুভ লক্ষণ দেখে মাটি খুঁড়তে থাকে। এমন সময় ডাকাত এসে আবার সবকিছু নিয়ে যায় । তখন সে বুঝতে পারে গুপ্তধন সেখানে নেই । বরং তার দ্বীপে গির্জার পাশে একটি গাছের নিচে আছে। তখন তারা খুঁজে পায়। প্রেমিকাকে বিয়ে করে । ধনী হওয়া সত্ত্বেও মেষ ক্রয় করে আবার রাখাল হয়ে যায় ।

শিক্ষনীয়:

১.স্বপ্ন জয়ে় ব্রত হতে হবে ( প্যাশনেট)।
২.সংগ্রাম করেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবে ।
৩."যখন কেউ কিছু পেতে চায় ,তখন সমস্ত পৃথিবী তার জন্য সাহায্য করতে থাকে ।"
৪.প্রচুর বই পড়তে হবে ।
৫.প্রকৃতির মাহাত্ম্য বুঝার চেষ্টা করতে হবে ।
৬. শুভ লক্ষণ বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
৭.ভাগ্যে যা থাকবে তা ঘটবেই।

©Mithun

Saturday, May 9, 2020

আরেক ফাল্গুন ___জহির রায়হান

Book Review: (10)

# আরেক ফাল্গুন 

___জহির রায়হান


এটি ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক প্রথম উপন্যাস।

#চরিত্র: 

১.আসাদ ২.মালতি ৩.সালমা ও তার স্বামী ৪.রওশন (রাজশাহী জেলে বন্দি) ৫.মমিন ৬.কবি রসুল (কালো কাপড় সেলাই) ৭. ডলি ৮.লেখক বজলে হোসেন ৯.নীলা ১০. বেনু ১১.সবুর ১২.রাহাত ১৩.মাহমুদ ১৪.শাহানা ১৫.মাহের(আঠা লাগানো) ১৬.ওসমান ১৭.রশিদ চৌধুরী (ঘুমাচ্ছিল) ১৮.রাজ্জাক সাহেব (রাজমিস্ত্রি) ১৯.জাহানারা ২০. বিলকিস ২১.শাহেদ ২২.পুলিশ কিউ খান

## সালমান কাছে মালতি চাঁদার টাকা নিতে এসেছে । আসাদ সালমাকে কালোব্যাজ দিতে এসেছে । রাতে তার বাসায় সাহেদের সাথে ছিল সে। বরকতের মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। শোক পালন করে কালো ব্যাজ ধারণ করে। কিন্তু তা পড়া নিষেধ দেখে নীলা ও বেনু কালো শাড়ি পড়েছে । আন্দোলনের নেতৃত্বে মমিন । সালমার স্বামী রাজশাহী জেলে বন্দী । মাঝে মাঝে তার চিঠি আসে। আসাদ হয়তো তাকে পছন্দ করে ফেলেছে এই কয়দিনে। মুমিনের বাসায় রাতে পুলিশ সার্চ করে কিন্তু সে বাইরে থাকায় বেঁচে যায় । মমিনকে ডলি হয়ত ভালোবাসতো কিন্তু কিভাবে যে সে লেখক বজলের সাথে এন্গেজড হয়ে গেল সেও বুঝিতে পারে না । বজলে ডলির কাছ থেকে সর্বস্বই পেয়েছে । বজলে নিরপেক্ষ মানুষ। সে মমিন এর রাজনৈতিক আদর্শকে ঘৃণা করে । মাহমুদ, শাহানা এক সাথেই থাকত। একদিন প্রণয়ী শাহানা তাকে ফেলে চলে যায় । একদিন বজলে কেউ প্রণয়ে আমন্ত্রণ জানায় । ২১ শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে শহীদ হয় রফিক ,জব্বার, বরকত । বরকতের উরুতে গুলি লাগলে রক্তক্ষরণে মারা যায়। তাদের স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের সামনে যেখানে রফিক শহীদ হয় (প্রথম শহীদ) সেখানে চার হাজার ইট দিয়ে মিস্ত্রী রাজ্জাক সাহেবকে দিয়ে তৈরি করে শহীদ মিনার। শহীদদের স্মরণে রোজা রেখেছে তারা অনেকই ।কেউ কেউ বড় কর্তাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করছিল এমনই একজন মাহমুদ। সবুর ও টাকার লোভে গোপনে রিপোর্ট দিয়ে যায়। মিলিটারি এসে শহীদ মিনার গুঁড়িয়ে দিলে কালো কাপড় দিয়ে ছাত্ররা জায়গাটা ঘিরে দেয় । বেধিতে ফুলের মালা অর্পণ করে। চামেলি হল, ফজলুল হক হল ,মেডিকেল হল, মুসলিম হল, ইডেন হোস্টেল , বান্ধব কুটিরে আন্দোলনের গমগম রব উঠেছে ও কালো পতাকা উত্তোলন করেছে । কিউ খানের নেতৃত্বে পুলিশ লাঠিচার্জ ও গ্রেপ্তার শুরু করছে । একে একে সবাই গ্রেপ্তার হয়। তবু তাদের কন্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে ,"শহীদদের খুন ভুলবো না,‌বরকতের খুন ভুলবো না ।"

©Mithun

Thursday, May 7, 2020

ফ্রাঙ্কেস্টাইন

Book Review: (09)

#ফ্রাঙ্কেস্টাইন

___মেরি শেলি



#চরিত্র:

১.ভিক্টর /ফ্রাঙ্কেস্টাইন: নায়ক, বিচক্ষণ, বিজ্ঞানী (রবার্ট তাকে মুমূর্ষু অবস্থায়)
২. এলিজাবেথ: ভিক্টরের বাবা তাকে দত্তক নেয়। দায়িত্বশীল যত্নশীল মেয়ে। ভিক্টরের সাথে বিয়ের রাতে খুন হয়।
৩. আলফা অন্স ফ্রাঙ্কেস্টাইন: বাবা
৪.উইলিয়াম: (ছোট ভাই ) ছোট, সুন্দর চেহারা (খুন হয়)
৫. হেনরি: বন্ধু
৬.জাস্টিন মরিস : উইলিয়ামকে ভালোবাসতো । তাকেই খুনের দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয় অথচ সে নির্দোষ।
৭. রবার্ট ওয়ালটন: জাহাজের ক্যাপ্টেন (উত্তর মেরু আবিষ্কারের বেরিয়ে পড়ে)
৮. মার্গারেট: রবার্টের বোন। তার যাত্রার সকল ঘটনার বোনকে জানায় চিঠিতে।
৯.‌ কারউইন: আয়ারল্যান্ডের বিচারক। ১০. মা: ভিক্টরের পরিবার থাকতো সুইজারল্যান্ডে।

## রবার্ট ওয়ালটন মেরুর উদ্দেশ্যে চলছে। যাত্রার সমস্ত ঘটনা মার্গারেটকে চিঠিতে লিখছে।
সমুদ্রের মধ্যে বরফখন্ডের উপর ভেসে আসা এক মুমূর্ষ ব্যক্তিকে খুঁজে পায় ,নাম ফ্রাঙ্কেস্টাইন। তার সকল ঘটনা় শোনেন ও চিঠিতে লিখেন। ফ্রাঙ্কেস্টাইন একজন বিজ্ঞানী। তার লক্ষ্য মৃত মানুষকে রক্তমাংসের সুন্দর মানুষ তৈরি। ভার্সিটির সেরা ছাত্রটি তা একসময় আবিষ্কারও করে ফেলে। তৈরি করে 8 ফুট এর দানব, যত্ন নিয়ে বানায় । কিন্তু হয়ে যায় কুৎসিত চেহারার। ফ্রাঙ্কেস্টাইন ভীত। দানবটি জীবিত হয়ে ঘর থেকে চলে যায়। কুৎসিত, ভয়ঙ্কর বলে আগে তাকে কেউ গ্রহণ করে না। দুঃখে, প্রতিহিংসায় খুন করে উইলিয়াম (ছোট ভাই) কে। খুনের দায় চাপিয়ে দেয় জাস্টিনের ঘাড়ে ( উইলিয়ামের লকেটটা তার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে) । শক্ত কোন প্রমাণ না থাকায় নির্দোষ মহিলার ফাঁসি হয়। ফ্রাঙ্কেস্টাইন বুঝতে পারে এসবই ঐ দানবটির কাজ । তাই সে প্রতিশোধ নিতে চায় । সঙ্গী নেই, তাই দানবটির সঙ্গী তৈরি করে দিলে আর মানুষ খুন করবে না, বলে। ভিক্টর তাতে রাজি হয় না এক সময় চাপে পড়ে রাজি হয় ও ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে এক মেয়ে দানব বানানো শুরু করে। তৈরি হয়ে গেলে সে আবার ভাবতে থাকে এই দানব যদি আবার মানুষ হত্যা শুরু করে । মানবজাতির জন্য হুমকি হয় যদি ? তাছাড়া সে তার সঙ্গীকে গ্রহণ করবে তার কি নিশ্চয়তা আছে ? এসব ভেবে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে জীবিত হয়ে উঠার আগেই । তা দেখে রাগে ফেটে পড়ে দানবটি ও এর প্রতিশোধ নেবে বলে চলে যায় । মেয়ে দানব টিকে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিতে গিয়ে শ্রান্ত হয়ে নৌকায় ঘুমিয়ে পড়ে ভিক্টর। নৌকা সমুদ্রের ভেতরে চলে যায় । ঝড়ের কবল থেকে বেঁচে নৌকা ভিড়ে আয়ারল্যান্ডের দ্বীপে। সেখানে বন্ধু, হেনরির, খুনের দায়ে দোষী করা হয় তাকে। বিচারক কারউইন বুঝতে পারে সে আসলে খুনি নয় । ভিক্টরের বাবা আসলে তাকে মুক্ত করে দেয়া হয় । সে ফিরে আসে সুইজারল্যান্ডে । আগেই এলিজাবেথের সাথে বিয়ের কথা ছিল । বিয়ের আয়োজন ও বিয়ের রাতে ভিক্টর নিচে অপেক্ষা করছিল দানব আসলে গুলি করবে । কিন্তু দানব লুকিয়ে উপরের ঘরে গিয়ে এলিজাবেথকে হত্যা করে চলে যায় । ভিক্টর তাতে মুষড়ে পড়ে ও দানবকে হত্যার জন্য পণ করে । পিছু পিছু ছুটতে ছুটতে পৌঁছে যায় বরফের দেশে । বরফের মধ্যে নিজেকে টিকিয়ে নেয় কিন্তু ভিক্টর পারে না । অনাহারে, শীতে সে একেবারে ভগ্ন হয়ে পড়ে।  সাথের কুকুরগুলোও মারা গেছে। ভূমিকম্পে বরফে ফাটল ধরে । বরফখণ্ড গলতে থাকে । তার উপর চড়ে হলেও তাকে মারবে সে । পরে জাহাজ দেখে সেখানে আসে । ফ্রাঙ্কেস্টাইনের আজ প্রাণ যাচ্ছে যাচ্ছে । বৃদ্ধ, নিশ্চল শরীর নিয়ে উঠতেও পারে না এখন । একদিন মারা যায় জাহাজের মধ্যেই। হঠাৎ জাহাজে তার কক্ষে় দানবটি আসে ও উপহাস করে । তার লক্ষ্য সার্থক হয়েছে বলে, সে মেরুর উদ্দেশ্যে চলে যায় । আর কখনো মানব বসতিতে আসে না । রবার্ট বরফের পাহাড় কেটে আর এগিয়ে যেতে না পেরে নিজ দেশে ফিরে আসে ব্যর্থ প্রয়াস নিয়ে ।

#শিক্ষা: বিজ্ঞান উপকারী কিন্তু কখনো কখনো সে যে দেখা দেয় অভিশাপ হয়ে। তাই নিজের গন্ডির মধ্যে থাকা উচিত। সৃষ্টির শৃংখলকে, প্রকৃতির নিয়মকে ভাঙতে গেলে ফল হতে পারে ভয়ঙ্কর।

©Mithun

Wednesday, May 6, 2020

অপেক্ষা

Book Review : (06)

#অপেক্ষা

__হুমায়ূন আহমেদ

(প্রকাশ :১৯৯৭)



আমার অত‍্যন্ত পছন্দের একটি উপন‍্যাস। বইটি হয়ত অনেকেই পড়া, কিন্তু আমার এই প্রথম।

#চরিত্র:

১.ইমন: গম্ভীর, বুদ্ধিমান মেধাবী ছাত্র।
২.সুফিয়া: (মা) ; প্রথমে শান্ত স্বভাবে হলেও অপেক্ষার প্রহরে খিটমিটে হয়ে উঠে।
৩. হাসান: (বাবা) ; যার জন‍‍্য এত কিছু।
৪.ফিরোজ : (ছোট চাচা); বেকার তবে দায়িত্বশীল।
৫.সুপ্রভা: ইমনের ছোট বোন
৬. জামিলুর রহমান : (সুফিয়ার ভাই); ধনী ব‍্যবসায়ী।
৭. মিতু: (মামাতো বোন); ইমনের সাথে বিয়ে।
৮. ফাতেমা : ( মামী) বোকা, সহজ সরল।
৯. টোটন ও শোভন: জামিলের ছেলে, সন্ত্রাসী হয়ে উঠে।
১০. মুন্নী : গায়ে পড়া গোছের।
১১. আকলিমা বেগম: ইমনের দাদী (বৃদ্ধা)

## সুফিয়ার দিনকাল ভালোই যাচ্ছিল। অনেক শান্ত স্বভাবের বাড়ির বৌ টি সুখেই ছিল। একদিন তার স্বামী, হাসান, অফিস থেকে ফেরে না। সুফিয়া চিন্তায় ভেঙ্গে পড়ে, বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় হাসান সাহেবের জন‍্য অপেক্ষা। ইমনকে ছোট চাচা, ফিরোজ, অনেক ভালবাসে। আদর করে ডাকে হার্ড নাট। কারণ, ইমন খুব ছোট থেকেই গম্ভীর ও বুদ্ধিমান। এই দুর্দিনে সুফিয়ার একটা মেয়ে হয়, নাম সুপ্রভা। মা তার যত্ন নেয় না অপয়া বলে। সে হয়ে উঠে খিটখিটে স্বভাবের। ফিরোজ বেকার,তাই সুফিয়ার চলার কষ্ট হচ্ছিল। একদিন সুফিয়া তার ভায়ের বাসায় চলে যায়। অন‍্যের ঘাড়ে পড়লে একটু আধটু বাঁকা কথা সহ‍্য করতেই হয়। ইমন স্কুলে যায়। ছোট চাচা মাঝে মাঝেই দেখতে আসত, সুফিয়া সেটা দেখতে পারত না। আসলে সে তার স্বামীকে ভুলতে পারে না। টোটন,শোভন ও মিতুর সাথে ইমনের দিন চলে যেত। কিন্তু, বেশিরভাগই সে একা থাকত। আকলিমা বেগমের মুমূর্ষু অবস্থায় ফিরোজ তাদের নিতে আসলে সুফিয়া খেপে গিয়ে না করে দেয়। সুপ্রভা বড় হচ্ছে, বেশ সুন্দর হয়েছে,ভালো গান পারে,তবে ছাত্রী ভালো না। মামা তাকে খুব ভালোবাসে। মামার কাছে কোক চাইতে অফিসেও চলে যেত। তাই মামা অফিসে ফ্রিজ ভর্তি করে কোক রেখে দিত। ফিরোজ বিদেশে চলে যায়,কিন্তু, প্রায়ই চিঠি লিখত হার্ড নাটকে। একদিন পরীক্ষায় ফেল করে ও প্রমোশন পাবে না কেঁদে কেঁদে  বাসায় বললে মা রাগ করে ছাদ থেকে লাফ দিতে বলে। সে সম্মোহিতের মতো তাই করে বসে। সুপ্রভা নামটি মুছে যায়। মেয়েটির অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। মিতু ইমনকে বেনামি চিঠি দিত। মনে মনে ভালবেসে ফেলেছে। ইমনও হয়ত তাই। ফাতেমার সাথে তর্কে সুফিয়া একদিন অন‍্য জায়গায় বাসা নেয়। সেই বাসার মেয়ে মুন্নীকে ভালো লাগত তার। ইমনের সাথে বিয়েও দিতে চায়, কিন্তু, ইমনের মেয়েটিকে রক্ষী ভাবে। শোভন খুনের দায়ে ৩ বছর জেল থেকে ফিরে আরেকটা খুন করে ইমনের সামনে। ইমন সাময়িক স্মৃতি হারায়। শোভনের সাথে থেকে একবার মদও খেয়েছিল। ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্রটি ভবঘুরে হয়ে পড়ে, তার অনার্সের ফাইনাল পরীক্ষা দেয় না। সুফিয়া তার প্রথমকার বাড়িটা ভাড়া নেয়। আবার সাজিয়ে তুলে আগের মতো করে। মিতু তার ঠিক হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে বাবাকে প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করতে চায় ইমনকে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। বাসর রাত তাদের। একদিন তাদেরও এমন দিন এসেছিল। সুফিয়া আজও অপেক্ষা করছে হাসান সাহেবের জন‍্য। স্বপ্ন দেখেছিল ইমনের বিয়ের রাত্রে সে ঘরে ফিরবে। আকলিমা বেগমের জায়গাটিতে এখন সুফিয়া শুয়ে আছে। মানুষের জীবন যেন চক্রের মতো। এমন সময় দরজায় কড়া নড়ে উঠল। হাসান আসল বলে সুফিয়া আতকে উঠল। কিন্তু, দরজা খোলার সাহস পায় না।

আসলে প্রতিটি মানুষই অপেক্ষা করছে। সে কিসের অপেক্ষা? আকাঙ্ক্ষার? নাকি মৃত‍্যুর?

©Mithun

নন্দিত নরকে

Book Review : (08)

#নন্দিত_নরকে 

 __হুমায়ূন আহমেদ 




# এটি হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস।  প্রকাশিত হয় 1972 সালের।

#চরিত্র :

১. খোকা : ভদ্র, বাস্তব বাদী, শিক্ষিত, রসায়ন শিক্ষক হয় ।
২. রাবেয়া (বোন ): আধা পাগল মেয়ে, অমানুষের ঘৃণ্য থাবায় অন্তঃসত্ত্বা ও শেষ মৃত্যু । বছর ২২।
৩. রুনু (সালেহা ): ছোট বোন । বয়স ১২।
৪. শিলু (শিলা) : খোকার এই মেয়েকে ভালো লাগে ।  ডাকে শিলু বলে।
৫. নাহার ভাবি : হারুনের স্ত্রী। গান বাজায়, খোকার ভালো লাগে।
৬. হারুন ভাই : রাবেয়াকে পছন্দ করে কিন্তু তার মা তা মেনে নেয় না। বিয়ে দেয় নাহারের সাথে। পরে সে বিদেশে চলে যায় পড়তে।
৭. মাস্টার চাচা (শরিফ মিয়া) : খোকার বাবার বন্ধু। বিয়ে করে নি, তাদের বাসায় থাকে। এস্ট্রোলজির বই পড়ে ভালোই হাত দেখতে পারে। একদিন জঘন‍্য কাজও করে বসে।
৮. মন্টু: রাবেয়ার সৎ ভাই। রাগী তবে খোকাদের অনেক ভালোবাসে।
৯. মা-বাবা; বড় মা (ম‍ৃত)
পলা: কুকুর; রাবেয়ার ঘুরার সঙ্গী।

## অর্ধপাগল রাবেয়া পাড়ার এপার থেকে ওপার ঘুরে বেড়ায়, পলাকে নিয়ে। কেউ তাকে পচা কথা বললেও সে না বুঝ তাই বাড়ি এসে বলতে থাকে সবার সামনে। রুনু তা শুনে লজ্জা পায়। রাবেয়া পড়াশোনা করেনি। খোকার টেবিলের একটি পুরাতন খাতা চেয়ে নিয়েছিল রুনু। তাতে সে কবিতা লেখে ও দাদার ট্রাংকে লুকিয়ে রাখে । তাই দেখে দাদার ইচ্ছে, তাকে একটি ভালো খাতা কিনে দেবে। মার ইনসমনিয়া থাকায় বাবা মাঝে মাঝে রাতে এসে এসপিরিন নেয় খোকার  কাছ থেকে। রাবেয়ার রাতে বাথরুম পেলে খোকাকে সাথে নিয়ে যায়। দুঃখের সংসারে সবার সুখ এনে দিতে চায় খোকা চাকরি পেয়ে । রাবেয়া পাশের বাসায় নতুন আশা শিলাদের বাড়িতে যাওয়া শুরু করেছে। তারা একটা কলমদানি উপহার দেয় রাবেয়াকে। তা সে যত্ন করে রেখে দে খোকার টেবিলে আর বলে দেয় যেন সেটা খোকা কখনও তার বলে দাবি না করে। শিলার ভাই হারুন রাবেয়ার প্রেমে পড়ে বিয়ে করতে চাইলে তার মা এসে শাসিয়ে যায় রাবেয়ার মাকে। সেবার বাবা রাবেয়াকে বেধম মারে। রাবেয়া বুঝেনা কেন মারছে তাকে। পরে নাহার ভাবির সাথে হারুনের বিয়ে হয় ও হারুন বিদেশে পিএইচডি করতে যায়। অভাবের সংসার ভালোই চলছিল। মাস্টার চাচা বাবার বন্ধু। সে বিয়ে করেনি। বাবার বিয়েতে এসেছিল সেই থেকে রয়ে গেছে। তাদের সকলকে পড়ায়। স্কুলের বেতনের সব টাকা দিয়ে অ্যাস্ট্রোলজির বই কিনে । অ্যাস্ট্রোলজি পড়ে পড়ে তিনি ভালোই হাত দেখতে পারেন। মন্টুর মার হাত দেখে বলেছিলো ছেলে হবে। শেষে তাই হয়। তাতে তার সম্মান বেড়ে যায়। খোকা শিলাকে নিয়ে আজকাল স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে । একদিন খারাপ একটা ঘটনা ঘটে যায়। রাবেয়া বমি করতে থাকে।   আসলে সে অন্তঃসত্ত্বা। কিভাবে হলো এসব কেউ জানে না। রাবেয়া কে জিজ্ঞেস করে মা কিছু বুঝলেন না। গোপনে ডাক্তারের কাছে গেল তারা। একদিন খোকার একটা কলেজের শিক্ষকতায় চাকরি হয়ে যায়। বেতন ২০০ টাকা। একদিন ঘরময়  রক্তে ভেসে যাচ্ছে । খোকা বুঝল রাবেয়ার এবোর্শন হচ্ছে।ব্লিডিং থামছেনা দেখে মাস্টার চাচা খোকার সাইকেল নিয়ে ডাক্তার আনতে যায় শহরে। । আসতেই শরিফ মিয়াকে দেখে মন্টু বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এদিকে ব্লিডিং এর কারনে রাবেয়াও মারা যায়। মন্টু কে ধরে নেয় পুলিশ। শরিফ মিয়াকে হত‍্যার কারণ কারো কাছে গোপন রইল না। ঠান্ডা মাথায় খুনের অপরাধে ফাঁসির আদেশ হয় মন্টুর। ক্ষমা চাওয়া না মঞ্জুর হওয়ায় ফাঁসি কার্যকর হয়। খোকা আর বাবা তার লাশ নেওয়ার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছে।
©Mithun

দত্তা

Book Review : (07)

#দত্তা

____কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 




# সমাজের করুণ দৃশ‍্যগুলো অকপটে দর্পনের মতো পাঠকের সামনে বর্ণনা করে গেছেন। বইটি সাধু ভাষায় রচিত হলেও বুঝতে কোন সমস‍্যা হয় না। এখানে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তিন বাল‍্য বন্ধুর শেষ পরিণতি ও তাদের সন্তানদের মধ‍্যকার সম্পর্কের দৃশ‍্য।

#চরিত্র:

১.বনমালী:( মেয়ে - বিজয়া) ব্রাহ্মণ, জমিদারী, মেয়ে বেশ সুশ্রী ও ভদ্র।
২.জগদ্বীশ:(ছেলে- নরেন) ; ছেলে ডাক্তার ;ভদ্র, সুদর্শন, পরহিতৈষী।
৩. রাসবিহারী( ছেলে- বিলাসবাবু) ; স্বার্থান্বেষী, লোভী, ধূর্ত, ভনিতা ; জাতিতে কৈবর্ত‍্য।
৪.নলীনী: দয়ালের ভগিনী
৫. দয়াল: প্রাচীন আচার্য ; ভালো মানুষ
৬.কালিপদ: দারোয়ান
৭.পরেশ ও তার মা
৮. ভৃত‍্য ও কর্মচারী

## বনমালী, জগদ্বীশ,রাসবিহারী প্রাণের বন্ধু। একসাথে স্কুলে যায়। জীবনেও আলাদা হবে না, প্রতীজ্ঞা করে। কিন্তু বড় হলে সেই কথা আর থাকে না। জগদ্বীশ মদ, জোয়ায় স্বর্বস্ব হারায়। নিজের বাড়িটাও ঋণের দায়ে জব্দ হয়। ছেলেকে বিলেত হতে ডাক্তারী পড়ায়। বনমালী মারা যাওয়ার সময় বিজয়াকে নরেনকে বিয়ে করতে বলে যায় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী। দেনার দায়ে নরেনের বাবার স্বর্বস্ব রাসবিহারীর কুপ্রচেষ্টায় দখল করে সেখানে ব্রাহ্মমন্দির বানায় বিলাস বাবু। এতদিন রাসবিহারী বনমালীর জমিদারী দেখার সুবাদে প্রজার উপর অনেক অন‍্যায় করেছে, কর্তৃত্ব দেখিয়েছে। গুরুজন বলে বিজয়া তাকে কিছু বলে না। বাড়ির দারোয়ান, আয়ার সাথে কর্তৃত্ব করে চলত। বিলাস সব জায়গায় অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ও রাগ দেখালে ধূর্ত রাসবিহারী তাকে শান্ত করে মিষ্টিবানী শুনিয়ে দেয়। পরেশ ও দয়ালের স্ত্রীর বসন্তে ডা. নরেন চিকিৎসা করে। একদিন বিজয়া অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা করতে গেলে রাসবিহারী,বিলাস অপমান করে দেয়। বিজয়া সব বুঝেও কিছু বলতে পারে না। ইতিমধ্যে সে নরেনকে ভালোবেসে ফেলেছে, বাড়িতে আসলে  না খেয়ে যেতে দেয় না। এক রাত আত্মীয় হয়ে ছিল বলে অনেক অপবাদ সহ‍্য করতে হয়। চতুর রাসবিহারী এক অনুষ্ঠানে বিজয়ার অনুমতি না নিয়েই তার সাথে বিলাসের বিয়ের কথা ঘোষনা করে দেয়, সামনের পূর্ণিমাকে লগ্ন ঠিক করে দেয়। বিজয়া ভদ্র মেয়ে বলে প্রতিবাদ করতে পারে না। সব শুনে নরেন কম আসে এখন। নদীর ধার দিয়ে হাটার সময় দয়ালের সাথে এসব শুনে তার বাড়িতে গিয়ে নরেন কে রাতে দেখে তাকে ভুল বুঝে ও তখনই তার সাথে কথা না বলেই ফিরে আসে। রাসবিহারী বিয়ের রেজিস্ট্রির চিঠি নিয়ে আসে সাইন করার জন্য। বিজয়ার কাছে ক্ষোভে তখন বিলাসকেই কম অপরাধী মনে হয়। তাই সে রাগে সাইন করে দেয়। পরের দিন নরেন আসে। দয়াল তার ভগিনী নলিনীর কাছে এসব শুনে সেও আসে। বিজয় ভুল বুঝে দয়ালকে ধরে কাঁদতে থাকে, সে যে অন্যকে কথা দিয়ে ফেলেছে। বিয়ের আর দুই দিন বাকি। রাসবিহারী বাড়িতে রীতিমতো আয়োজন করছে, নিমন্ত্রণও জানানো হয়ে গেছে। বিকালে দয়াল এসে বিজয়াকে দাওয়াত করে তার বাড়িতে, পরের দিন পালকী আসবে বলে যায়। রাসবিহারী কেও আমন্ত্রণ করে যায়। পরের দিন বিজয়া দয়ালের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হযে় দেখে বিয়ের আয়োজন চলছে। দয়াল এসে তাকে তৈরী হতে বলে যায়, আর বলে নলিনী তার সব ভুল ধরিয়ে দিয়েছে। মন থেকে বিলাসের বিয়েতে রাজি না তাই সে স্বীকৃতি কবুল হয় নাই। নরেন বিজয়াকে সাজানোর ভার নলিনী কে দেয়। যথারীতি বিয়ে সম্পন্ন হলো। এমন সময় রাসবিহারী এসে এমন কাণ্ড দেখে আকাশ থেকে পড়ে। দয়াল তাকে বিয়ের খাবার খেয়ে যেতে বলে। রাগে,স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে গদগদ করতে করতে বেরিয়ে যায় সে।

©Mithun

অদৃশ‍্য মানুষ

Book Review : (05)

#The Invisible Man

 ___H.G.Wells 





#চরিত্র:
১. ইনভিজিবল ম‍্যান (গ্রিফিন) : ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী। পদার্থ ও রসায়নে গোল্ড মেডেলিস্ট, বিজ্ঞানী।
২. হল ও মিসেস হল: তাদের সরাইখানায় ভাড়া নিয়ে থাকে গ্রিফিন।
৩.কাস: কৌতুহলী, হলের বন্ধু।
৪. রেভারেন্ট বান্টে: সাহসী, কাসের বন্ধু ও হলের পরিচিত। সাহায্যে আসে।
৫.স‍্যান্ডি: ইনভিজিবল ম‍্যানকে ভূত ভেবে; ভূত তাড়াতে আসে।
৬. জ‍্যাফার্স: পুলিশ কর্মকর্তা।
৭.মার্বেল: ভিক্ষুক, গ্রিফিন তার সাহায্য চায়, বেচে থাকতে।
৮.ডক্টর:গ্রিফিনের স্কুল বন্ধু। বেচে থাকতে তার কাছেও সাহায্যের জন‍্য যায়।

## অত‍্যন্ত মেধাবী ছাত্র গ্রিফিন হঠাৎই আবিষ্কার নিয়ে মেতে উঠে। অদৃশ‍্য হওয়া নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে ও সফল হয়। প্রথমে বিড়ালের উপর পরীক্ষা চালিয়ে সেটা অদৃশ‍্য করে দেয়। পরে নিজেই নিজের উপর পরীক্ষা চালিয়ে অদৃশ‍্য মানবে রূপ নেয়। কিন্তু, সে অদৃশ‍্য হওয়া থেকে দৃশ‍্যমান হওয়ার কোন মেডিসিন বানাতে পারছে না। কেবলমাত্র পোশাক জড়ালেই তাকে দেখা যায়। তাই পোশাক ও কালো চশমা পড়ে সে মিসেস হলের বাড়ি এসে তার একটা সরাইখানা চড়া দামে ভাড়া নেয়। এতে মি. হলের একটু সন্দেহ হলেও মিসেস তা উড়িয়ে দেয়। অপরিচিত মানুষটির কাজকর্ম ও একা থাকা, কাউকে সহ‍্য করতে না পারা সব যেন সন্দেহ দানা বাজছিল তাদের কাছে। সেই সন্দেহের অবসান হয় একদিন। হঠাৎ করেই মিসেস হল তার রুমে ঢুকে পড়ে। দেখে একটি চেয়ার আপনা আপনি এদিক থেকে ওদিক যাচ্ছে। ঘরময় ওষধের শিশি ভেঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ভূত ভেবে দৌড়ে বের হয়ে আসে। বন্ধু, স‍্যান্ডিকে ডেকে আনে ভূত তাড়াতে। সেও সব কান্ড দেখে ছুটে বের হয়ে আসে। বেশ হৈচৈ বেধে যায়। পুলিশ আসে ধরতে। কিন্তু অদৃশ‍্য হয়ে সে পালিয়ে যায়। পড়ে থাকে কেবল কাপড়গুলো। সে বিজ্ঞানকে মানুষের কাজে লাগাতে চেয়েছিল। মানুষ তাকে ভুল বুঝে ও বিরক্ত করতে থাকে।অতীষ্ট হয়ে হিংস্র ও বিদ্বেষী হয়ে উঠে। সে বেচে থাকতে চুরি ও নর হত‍্যা শুরু করে। একসময় মার্বেলের সাথে পরিচয় হয়। মার্বেলকে মৃত‍্যুর ভয় দেখিয়ে তাকে বাধ‍্য করে তাকে সাহায্য করতে, খাবার জোগাড় করে দিতে বিনিময়ে সে অনেক অর্থ দেবে তাকে। কিন্তু, ভিক্ষুক তার থেকে দূরে থাকতে চায়। একসময় সে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তাই ইনভিজিবল ম‍্যান তাকে খুন করে তার অপরাধের শাস্তি দেবে বলে ঠিক করে। একদিন পুলিশ ও এই ইংরেজ তাকে রক্ষা করে। এসময় ইংরেজের এলোপাথাড়ি গুলিতে অদৃশ‍্য মানুষের একটি হাত জখম হয়। গ্রিফিন পালিয়ে তার বাল‍্য বন্ধুর রুমে চলে আসে আত্মরক্ষার জন‍্য। সে তাকে পরিচয় দেয় ও সব ঘটনা বলে সাহায‍্য চায়।আর বলে, সে তার ঐখানে থেকে গবেষণা করে ঠিক হওয়ার ওষধ আবিস্কার করবে। ড.অভয় দেয়, খাবার ও থাকার জায়গা দেয়। কিন্ত, সে ভাবে তাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে না দিলে সমাজের, দেশের ক্ষতি হতে পারে। যেকিনা চুরি ও মানুষ হত‍্যা শুরু করেছে। সিদ্ধান্ত নেয় তাকে ধরিয়ে দেয়াই ভালো হবে। রাতেই পুলিশকে খবর দেয়। ভোরেই সমস্ত বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে। অদৃশ‍্য মানুষ সব বুঝতে পেরে পালিয়ে যায়। বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তিস্বরূপ তার বন্ধুকে খুন করতে আসে। পুলিশ পাহারায় ছিল। শেষে সিড়িতে ধস্তাধস্তিতে ড. প্রায় মৃতপায় তখন পুলিশের এক কুড়োলের আঘাতে মেঝে ভেসে যায় লাল রক্তে। ক্ষতবিক্ষত হয় অদৃশ‍্য মানুষের অদৃশ‍্য শরীর। আস্তে আস্তে দৃশ‍্যমান হয়ে উঠতে থাকে সমস্ত দেহ।
পতন হয় মেধাবী বিজ্ঞানীর অপবুদ্ধির।
©Mithun

দেয়াল

Book Review: (03)

#দেয়াল

___হুমায়ূন আহমেদ 



##এটি একটি ইতিহাস আশ্রিত উপন‍্যাস। যেটি মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তীকালে দেশের কিছু কালো ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনার সাথে সাথে লেখক তার পরিবারের দুর্দশার কথাও টেনে এনেছেন। বইটির প্রথম প্রকাশকালে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট হয়। দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশ হয় লেখকের মৃত‍্যুর পরে। ভূমিকা লেখেন আনিসুল হক।
যেহেতু বইটির বিষয়বস্তু একটু রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। আমিও আমজনতাদের একজন, তাই নিজের মতামত কিছু দেব না। অত‍্যন্ত সংক্ষেপে বলছি__

#চরিত্র:
১.হুমায়ূন আহমেদ : সমস্ত ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন কোথাও প্রথম পুরুষ আবার কোথাও উত্তম পুরুষের ভূমিকায়।
২. শফিক : অবন্তীর গৃহ শিক্ষক।
৩.অবন্তী: অত‍্যন্ত সুদর্শনা নারী ব‍্যক্তিত্ব।
৪.সরফরাজ : অবন্তীর দাদা। খেয়ালী সন্দেহপ্রবণ।
৫. রাধানাথ : চিরকুমার। শেষ বয়সে অন্ধ হয়, ধনী। শফিকের সাথে গলায় গলায় ভাব।
৬. অবন্তীর মা-বাবা: তাকে দাদার কাছে রেখে ফ্রান্সে থাকে। অতিমাত্রায় পাশ্চাত্য।
৭. বঙ্গবন্ধু : তাকে হত‍্যা করা হয়।
৮. মেজর ফারুক : হত‍্যার মূল পরিকল্পনাকারী।
৯. মেজর রশীদ : সহায়তাকারী
১০. মেজর ইশতিয়াক : "
১১. খন্দকার মোশতাক :  সমর্থনকারী। বঙ্বন্ধুর পর রাষ্ট্রপতি হন।
১২. কর্নেল আবু তাহের :  বীর উত্তম। যুদ্ধে বা পা হারান।
১৩. নেত্রকোনার গদিনসীর পীর জাহাঙ্গীর ও তার বাবা : ভবিষ্যৎ বানী করতে পারে।
১৪. মেজর জিয়াউর রহমান : ৭ম রাষ্ট্রপতি।
১৫. জেনারেল মন্জুর : ঘাতক পাঠিয়ে জিয়াকে হত‍্যা।

## অবন্তীর মাস্টারকে সরফরাজ খান সন্দেহ করে, সে তার নাতনির সাথে পড়ানোর নাম করে প্রেম করে কি না।  ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। যুদ্ধের সময় তার নাতনিকে পীরের কাছে রেখে আসেন যাতে পাকিস্তানিদের কাছে নির্যাতিত হতে না হয়। অবন্তীকে এক হানাদার, শামস্ দেখে বিবাহ করতে চাইলে পীর দ্রুত তার সন্তান হাফেজ জাহাঙ্গীরের সাথে বিয়ে দেয়। ১২ বছরের মেয়ে তা কখনও মেনে নেয় নি। যুদ্ধে রাজাকাররা হানাদারদের প্রণোদনা দেয়।  যুদ্ধ শেষ হলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন বঙ্গবন্ধু। অন‍্যদের মতো থাকার জন‍্য বাসা পায় হুমায়ুন পরিবার। রক্ষী বাহিনী তাদের বের করে দিলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে তারা। এজন‍্য লেখক দুঃখ প্রকাশ করেছেন।  যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের নুইয়ে পড়া অর্থনীতিতে জনগণ অন্ন পায় না। এসময় বঙ্গবন্ধু অরাজকতা ও দুর্নীতি পরায়ন স্বার্থান্বেষী একদল চোরের দলের কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর মিশুক প্রকৃতির দিকটা ফুটে উঠেছে।  বাকশাল গঠিত হলে কিছু উগ্র সামরিক কর্মী তা মেনে না নিয়ে তার প্রতি একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ এনে ১৫ আগষ্ট ভোর ৫:১৫ তে বাড়ি ঘেরাও ও  ৫:৪৫ মিনিটে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত‍্যা করে। এসময় জাতীয় নেতার ভাষ‍্য আমরা সবাই জানি। বঙ্গবন্ধুকে তার বিপদের কথা ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করতে পারেন নি সন্তানতুল‍্য মানুষগুলো তার বিরুদ্ধে ছক্কার গুটি চালতে পারে। মেজর ফারুক, খন্দকার মোশতাককে রাষ্ট্রপতি বানায়। লেখক এখানে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এই জন‍্য যে এমন নেতার প্রতি অন‍্যায়ের বিরুদ্ধে সেদিন কোন বাঙ্গালী প্রতিবাদ করে নি বরং মিষ্টি বিতরন করেছিল কিছু জায়গায়। ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি সাদাত সায়েমের পরে মেজর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হন। বইটিতে বলা হয়েছে,, জিয়া সৎ ছিলেন। তার মৃত‍্যুর পর কোন সঞ্চয় ছিল না বলে রাষ্ট্রকে তার পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। কিন্তু,  জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত‍্যাকারী প্রধান তিনজনকেই ( মেজর ফারুক, মেজর রশীদ ও মেজর ডালিম) লন্ডন পালিয়ে যেতে সাহায্য করে ও  শেষে বাকিদের গ্রেফতার করে ফাসি দেয় (১১৪৩ জন)।এর মধ‍্যে তাহেরও ছিলেন। তাহের ( বীর উত্তম)  দুঃখ করেছিলেন। তার মৃত‍্যুর ৩৫ বছর পর বাংলাদেশ আদালত বলে যে, তাহেরের মৃত‍্যু ছিল অবৈধ। তাক ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। গোলাম আজমকে পাকিস্তান থেকে এনে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসান। এই অন‍্যায় পরিস্থিতিতে একমাত্র বিরোধীতা করে মেজর মন্জুর। শেষে এই মন্জুরের পাঠানো  ঘাতক এর কাছেই জিয়া প্রাণ হায়ায়।

বইয়ে যতটুকু আছে ঠিক ততটুকুর সংক্ষেপনই এখানে বললাম। যেহেতু রাজনৈতিকভাবে উপন‍্যাসটি বিতর্কিত। তবে, হুমায়ুন আহমেদ উপন‍্যাসটিতে একঘেয়েমিভাবটা কাটাতে অনেক উপমা ও রম‍্যের অবতারণা করেছেন।
বিভূতিভূষণ বলেছেন, "ইতিহাস আশ্রিত উপন‍্যাসকে শুধু উপন‍্যাসই ভাবা উচিত।"
তাই এসব সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নাই।

©Mithun

মা

Book Review : (2)

#মা

লেখক: ম‍্যাক্সিম গোর্কি (রুশ কথাসাহিত্যিক )




# এটি একটি কালজয়ী উপন‍্যাস। ধারণা করা হয় রুশ বিপ্লবের পেছনে এই বইটির অনন‍্য অবদান ছিল। বইটি আজও বিশ্বব‍্যাপী সমাদ্রিত। তবে বইটি পড়তে গিয়ে কিছুটা একঘেয়েমি আসতে পারে। এখানে উল্লেখ আছে কিভাবে জারদের শোষনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ একটি পরিবার থেকে ছড়িয়ে পড়ে সকল শ্রমিকদের মধ‍্যে।
এবার সরাসরি চলে যাচ্ছি সংক্ষেপনে--
#চরিত্র:
১. মা: শক্তমনের বিপ্লবী নারী চরিত্রের অবতারণা।
২. পেভেল ( ছেলে): নির্ভীক, অন‍্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ, যুক্তিবাদী, বিপ্লবের উদ্দীপক, এক কথায় প্রোটাগনিস্ট
৩. উইলিয়াম (পেভেলের বাবা ): কারখানার অক্লান্ত খাটুনিতে মারা যায়।
৪. শশাঙ্কা (শাশা) : পেভেলকে ভালবাসে ও তাকে সমর্থন করে।
#বিপ্লবী_বন্ধুরা__
৫.এন্ড্রু
৬. নিকোলাই
৭. রাইবিন
৮. আইভানবিচ
৯. শফি ( আইভানবিচ এর বিধবা বোন)
১০. ফেদিয়ামিন
১১. নিউদমিলা ( ইশতেহার ছাপার কাজ)
১২. আইভান (ডাক্তার)
১৩. মজুরদল ও কর্তারা।

## কারখানায় নিদারুণ পরিশ্রমের ফলস্বরূপ মজুররা যা পায় তা অতি সামান্য। অথচ তাদের পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে কর্তারা আকাশচুম্বী। ভয়ে জারের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না। মজুররা তাদের রাগের ঝাল মিটায় অবলা স্ত্রীদের উপর। খাটুনিতে পেভেলের বাবাও মারা যায়। পেভেল বড় হওয়ার সাথে সাথে মনে অন‍্যায়ের বিরুদ্ধে আগুনের ফুলকি দানা বাধতে থাকে। প্রচুর পড়াশুনা করে নিজের ব‍্যাক্তিত্ববোধকে শাণিত করে তোলে। বন্ধুদের সাথে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে লেখা ইশতেহার বিলি করতে থাকে কারখানার মজুরদের মধ‍্যে। ফলে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করে। পেভেলের অবর্তমানে পেভেলের তার জায়গা পূরণ করে মা। খাবার নিয়ে যাওয়ার ছলে লুকিয়ে ইশতেহার নিয়ে যায় মা। মজুররা প্রথমে সাহস পায় না কর্তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে। একসময় তারা সকলে রুখে দাড়ায় ধনীক শ্রেনীর শোষনের বিরুদ্ধে। অনেক নির্যাতন ও প্রাণ যায়। তবু তারা দমবার পাত্র নয়।শফি ছদ্মবেশে খবর পৌছায়। নিউদমিলা ইশতেহার ছাপার কাজ করে।পেভেল জেল থেকে ফিরে আবার সংগ্রাম শুরু করে। তার ভালবাসার মানুষকে বিসর্জন দেয়। সাম‍্যবাদীর পতাকায় মজুরদের নিয়ে মিছিল নামে, স্লোগান --" উঠো জাগো মজুরদল, ক্ষুধিত মানব যুদ্ধে চল।" পেভেল ও সঙ্গীরা গ্রেফতার হয় ও বিচারে সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত হয়। আদালতে দেয়া পেভেলের শেষ বানী পৌছে দেয় সকলের কাছে। সকলের মা হয়ে প্রতিয়মান বিপ্লবী বৃদ্ধ নারী সরকারের বিরুদ্ধে সত‍্য লেখা নিষিদ্ধ বই বলে অভিহিত তা মজুরদের মধ‍্যে বিলি করে। মজুররা তাদের ন‍্যায‍্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। শেষে মা ও ধরা পড়ে।জানে সেও নির্বাসিত হবে। স্বামী সন্তান হারা, প্রত‍্যহ নিদারুণ কষ্টের মধ‍্য দিয়ে দিনাতিপাত করা বৃদ্ধা আজ খুশি এই ভেবে যে তাদের ত‍্যাগ সফল হতে চলেছে।

আপনারাও বইটি পড়তে পারেন।
©Mithun

Tuesday, May 5, 2020

দি এডভেঞ্চার অব ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস

Book Review -(1):


#দি এডভেঞ্চার অব ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস

____জুল ভার্ন




চরিত্র :

১.ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস:( ফরওয়ার্ড জাহাজ) ব্রিটেনের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। ভ্রমণপিপাসু, যিনি লক্ষ‍্য জয়ে মরিয়া। উত্তরমেরু আবিষ্কারের নেশায় চুর।
২.ড.ক্লবনি: অত‍্যন্ত বিদ‍্যানমনষ্ক আবিষ্কারক চরিত্র, ক‍্যাপ্টেনের অনুরাগী।
৩. রিচার্ড শ‍্যানডন: সাহসী ব‍্যাক্তিত্ব, কিন্তু শেষে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
৪. বেল ও
৫. জনসন : দুজনেই ক‍্যাপ্টেনের দুঃখের সাথী, শেষ করুণ মুহূর্তের স্বাক্ষী।
৬. ডাক: হ‍্যাটেরসের বিশ্বস্ত কুকুর।
৭.আলট্রামন্ট: আমেরিকান জাহাজ পয়পরেজের ক‍্যাপ্টেন।
৮. নাবিকরা মিলিয়ে মোট ১৭ জন যাত্রী।

## ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস তার ফরওয়ার্ড জাহাজ ও প্রয়োজনীয় রসদপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েন, সাথীদের রাজি করাতে গুনতে হয় বেশ মোটা অঙ্কের বেতন ভাতা। প্রথমে ক‍্যাপ্টেন নিজের পরিচয় গোপন রাখেন। জাহাজ বিপদসংকুল পরিবেশে এগিয়ে চলছে তরতর করে। কয়েকমাস পর জাহাজ আটকা পড়ে বরফের চাইয়ের মধ‍্যে। সামনে এগুনোর রাস্তা বন্ধ, এমন সময় বেরিয়ে আসেন নির্ভীক ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস। কোন বাধাই তাকে দমাতে পরে না। কামান ছুড়ে বরফের পাহাড় কেটে এগিয়ে যেতে থাকে ফরওয়ার্ড। একসময় আটকা পড়ে বিশাল বরফের পাহাড়ে। নাবিকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তারা আর যায় না। এদিকে জাহাজের খাবার ও জ্বালানি সবই শেষ। দূরে কয়লার সন্ধানে গিয়ে আমেরিকান ক‍্যাপ্টেন আলট্রামন্টকে খুজে পায় বরফের নিচে। সকলেই ক্ষুধার্ত মৃতপ্রায় এক অন্তিম মুহূর্তের শিকার। কুকুর, ডাকের সহায়তায় ফিরে আসে। আল্ট্রামন্ট সুসথ হলে তার জাহাজ পয়পরেজের সন্ধান দেয়। যাতে কোন কিছুরই অভাব ছিল না। ক‍্যাপ্টেন নতুন উদ্দমে মাত্র ৫ জন মিলে লক্ষ‍্যের দিকে ছুটতে থাকে। রাস্তায় আমেরিকান ক‍্যাপ্টেন আদায় কাঁচকলা ভাব, সাদা ভাল্লুকের আক্রমনের শিকার ও ড. ক্লবনির ধূর্ততায় তা থেকে বেরিয়ে আসা, আগুনের অভাবে মুমূর্ষু সকলকে অভিনব কায়দায় বরফের ক্রিস্টাল থেকে আগুন তৈরী, শেষে দুই ক‍্যাপ্টেনের বন্ধুত্ব হয়ে যাওয়ার পর আবিষ্কারের স্থানের নাম নিয়ে বিতন্ডা চুকে যায়। ক‍্যাপ্টেন হ‍্যাটেরাস আবিষ্কার করেন উত্তর মেরু। কিন্তু, তাতেও সে সন্তুষ্ট না। মেরুবিন্দুতে ব্রিটেনের পতাকা না উড়িয়ে ক্ষান্ত হবেন না। কিন্তু হায় মেরুবিন্দু তো জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখে। কেউ ক‍্যাপ্টেনকে যেতে দেবে না। ক‍্যাপ্টেন মরিয়া। নিজের মৃত‍্যুকে হাতে নিয়ে লাফিয়ে উঠতে থাকে মাউন্টেইন অফ হ‍্যাটেরাসে, সাথে তার একমাত্র শেষ সঙ্গী 'ডাক'। ক‍্যাপ্টেন চূড়ায় উঠে গেছে। লাফিয়ে পড়ার মুহূর্তে তাকে বাঁচায় সদ‍্য গড়ে উঠা বন্ধু আল্ট্রামন্ট। শেষে ৫ জন ফিরে আসে লন্ডনে। ঐদিকে বিশ্বাসঘাতকরা অনাহারে তীব্র শীতে সবাই মারা যায়। অভিজ্ঞতা : ইগলু ( বরফের তৈরী ঘর) বানানো এসকিমুদের জীবন পদ্ধতি ( কাঁচা মাছ ভক্ষনকারী) সব মিলিয়ে বইটি অসাধারণ। পদেপদে বিপদকে জয় করে আত্মার চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তরিত করতে সংগ্রামী হওয়া ছাড়া গত‍্যন্তর নেই। এটাই উপন‍্যাসের মূল প্রতিপাদ্য। আপনারা বইড়ি পড়ে দেখতে পারেন। সময় অপচয় হবে না, নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
©Mithun

Ferdous Hasan Mithun

How Will You Isolate and Characterise Salmonella spp. from Beef?

Isolation and Molecular Characterization of Salmonella spp. from Beef. Author:  Ferdous Hasan Mithun* Introduction: Innumberable foodborne z...