Book Review: (15)
এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস
___ড্যান ব্রাউন
# অত্যন্ত জনপ্রিয় বই এটি। তৃতীয় বারের মতো রিভাইজ শেষ। ইতিহাস,রহস্য আর থ্রিলিং মিলিয়ে এক অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি আরেকটি বিখ্যাত বই লিখেছেন, #দ্য_দা_ভিঞ্চি_কোড ( ল্যুভর মিউজিয়ামে ভ্রাতৃ সংঘের রহস্য নিয়ে লেখা ) । যেখানে আছে রবার্ট ল্যাংডন, মিউজিয়ামের কিউরেটর জ্যাক সনিয়ে, নাতনি সফি , ক্যাপ্টেন বেজু ফসে ) । সত্য ঘটনাকে রংচং দিয়ে উপস্থাপন করেছেন তিনি এই বইটিতে। ২০ নং রিভিউতে থাকবে সেটা।
চরিত্র :
১.প্রফেসর রবার্ট ল্যাংডন: বিখ্যাত সিম্বলজিস্ট । লেখা বই The art of Illuminati (part 1 and part 2)
২. ইন্সপেক্টর জেনারেল অলিভিয়াটি ৩.কমান্ডার রিখটার
৪. মিস ভিট্টোরিয়া ভেট্রা
৫.ফাদার প্যাট্রিক : পোপের অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্বে।
৬.কার্ডিনাল স্ট্রাউস : পোপ নির্বাচক।
মূল কাহিনী:
বিজ্ঞানমনস্ক দের সাথে চার্চের বিবাদ বহুদিনের। রোমে সমগ্র বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মের পোপের মৃত্যু হয় । এইজন্য পোপ নির্বাচনের জন্য সমগ্র পৃথিবী থেকে এসেছে পবিত্র ধর্মগুরুরা। টানা নয়দিন শোক দিবস (Say day) পালন শেষে কার্ডিনাল স্ট্রাউসের নেতৃত্বে ধর্মগুরুরা গোপন বৈঠকে বসেছে পোপ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু পদপ্রার্থী ৪ ধর্মগুরুরা এখনো নিখোঁজ। তার জন্যই ডাক পড়লো বিখ্যাত সিম্বলজিস্ট প্রফেসর ল্যাংডনের।
তার কাছে পাঠানো দূত একটা নকশা নিয়ে আসে। ল্যাংডন বুঝে সেটি এম্বিগ্রামে ছাপা । এটি এমন একটি লিখন পদ্ধতি যা সোজা কিংবা উল্টো যেদিক থেকেই পড়া হোক না কেন একই অর্থ দাঁড়ায়। এটি ইলুমিনাটিদের তৈরি যা গ্যালিলিওকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। ইলুমিনাটি অর্থ The enlighten one বা জ্ঞানী। গ্যালিলিও নিজেও ইলুমিনাটির সদস্য ছিল। তিনি তৈরি করেছিলেন Path of Illumination যা একটি গুপ্তপথ যেটি রোমের ভেতর দিয়ে চার্জ অব ইলুমিনেশন পর্যন্ত গিয়েছে । যারা এই পথের সমাধান করতে পারত তাদেরকেই ইলুমিনাতির সদস্য করে নেয়া হতো। গ্যালিলিও চেয়েছিল ধর্ম ও বিজ্ঞানের মিলন, কোনো বিবাদ নয়। ১৬৬৮ সালে চার ইলুমিনাটিকে চার্জ গরম লোহা বিদ্ধ করে হত্যা করে। তা থেকে জন্ম নেয় এক হিংসাত্মক ইলুমিনাটি সমাজের। তারা ৪ ধর্মগুরুকে অপহরণ করে, একটি বার্তা পাঠায় , " চারটি স্তম্ভ ধ্বংস করে দেবে, ধর্মগুরুদের বুকে ইলুমিনাতির ছাপ ফেলবে, ভ্যাটিকান সিটিকে আলোয় গ্রাস করবে।" ল্যাংডন বার্তার অর্থোদ্ধার করে,চার স্তম্ভ= চার গর্মগুরু; ইলুমিনাটির পাঁচ চিহ্ন; আলোয় গ্রাস= বিস্ফোরক। মিস ভিট্রার তথ্য অনুযায়ী লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডের কোন স্থানে একটি এন্টিমেটার আছে যেটার ক্যানিস্টার চার্জ ফুরিয়ে নিচের অংশ স্পর্শ করে ফেলে ভয়ানক বিস্ফোরণে ভ্যাটিকান ধ্বংস হয়ে যাবে। ইলুমিনাটির পাঁচটি চিহ্ন হচ্ছে, Earth, Air, Water, Fire & Last one is unknown yet. ৯ম পোপ পায়াস ১৮৮৭ সালে চার্চে রাখা নগ্ন মূর্তি মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে সেগুলোকে নপুংসক বানিয়ে ফেলে । ল্যাংডন , ফাদার প্যাট্রিকের অনুমতি নিয়ে মিস ভেট্রাকে নিয়ে ভ্যাটিকান আর্কাইভে যায় গ্যালিলিওর তৃতীয় বই খুঁজতে। ইলুমিনাটির এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত 5D3 । Where, 5 =meaningful number, D= Diagrama-3 । গ্যালিলিও তিনটি বই লিখে গেছেন। ১. Dialogo ( সৌর জগৎ ও পৃথিবী নিয়ে অনেক সত্য তুলে ধরেন) ২. Discorsor ( এই বইতে চার্চের চাপে ১ম বইয়ের সবকিছুকে অমূলক বলেন) ৩. Diagramma Della Verita ( তার চূড়ান্ত বিচার ও সিদ্ধান্ত রেখে যান) । কোড অনুযায়ী ৫ নং পৃষ্ঠায় ক্লু থাকার কথা। সন্ধান পায় বার্নিনির ডিজাইন করা স্যান্টির ( শিল্পী রাফায়েল) বানানো সেন্টামারিয়া দেলপোপোলো ( পৃথিবীর প্রার্থণালয় )। পৃথিবী প্রথম ক্লু। সেখানে এঞ্জেল এন্ড ডেমনসের মূর্তি । যেখানে প্রথম কার্ডিনালের খুন, বুকে এম্বিগ্রামের ছাপ Earth । এঞ্জেলের হাতের আঙুল দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নির্দেশ ( সেন্ট পিটার্স্কয়ারের দিকে) । সেখানেই বায়ু সম্পর্কিত ২য় মূর্তি "এঞ্জেল"। তার মুখের হাওয়া পূর্ব দিক বইছে। অর্থাৎ পশ্চিমে বার্নিনির বানানো কোন মূর্তি থাকবে। ২য় ধর্মগুরুও মারা যায় , বুকে Air । পশ্চিমে গিয়ে সেন্টামারিয়া ডেলাভিটোরিয়াতে পায় ফেরাফিম অর্থাৎ আগুনের সাথে সম্পর্কিত মূর্তি " স্ট্যাচু অব সেন্ট টেরিজা"। ৩য় ধর্মগুরুর খুন ,বুকে ছাপ Fire । সময় বেশি নেই । ৪র্থ কার্ডিনালকে বাঁচাতেই হবে। তিনটি মূর্তিকে সরলরেখায় জুড়ে একটি হলি ক্রস পায় , যেখানে চতুর্থটি। মূর্তির বল্লম এর ফলাও সেদিকেই নির্দেশ । পায় জলের সাথে সম্পর্কিত বার্নিনির বানানো " ফোর রিভার "। সেখানেই সেন্ট এঞ্জেলো জোসেল অর্থাৎ চার্চ অব ইলুমিনেশন অবস্থিত। রিখটার ল্যাংডনকে সাহায্য না করে চলে আসলে তাকে সন্দেহ করে। অলিভিয়াটি এবং ভেট্রাকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ৪ র্থ কার্ডিনালকে পায় । তার বুকেও Water মার্ক। কিন্তু, সে তখনও জীবিত, হাসপাতালে নিয়ে যায়। রিখটার সব বুঝে যায়, তাই সে ফাদার প্যাট্রিকের ঘরে গিয়ে সব বলে দেয়। প্যাট্রিক চালাকি করে নিজের বুকেই ইলুমিনাটির ৫ম চিহ্নের ছাপ ফেলে। স্ট্রাউস ঘরে ঢুকেই দেখে রিখটার গুলি হাতে দাঁড়িয়ে। কিছু বুঝে উঠার আগেই সুইজ গার্ডের দুজন গুলি করে ইলুমিনাটি ভেবে। প্যাট্রিক তখন তার জানা জায়গা থেকে এন্টিমেটারটা নিয়ে হেলিকপ্টারে করে উপরে উঠে বিস্ফোরন ঘটিয়ে প্যারাসুটে নিচে নেমে আসে। সবাই তাদের যোগ্য ধর্মগুরুর সাহসিকতায় তালি দিতে থাকল। কিন্তু, রিখটারের বুদ্ধিতে ল্যাংডনের পকেটে রেখে যাওয়া , মোবাইলের রেকর্ডে সব ফাঁস হয়ে যায়। ফাদার প্যাট্রিকের আর পোপ হওয়া হলো না। সে নিজেই ইলুমিনাটির সদস্য ছিল। গায়ে আগুন দিয়ে মারা যায়। সেও বিজ্ঞান ও ধর্মের মিলন চেয়েছিল। বোঝাতে চেয়েছিল এরা পরস্পর বিরোধী নয়, বরং এক।
#বি_দ্র: ইলুমিনাটির ৫ম চিহ্ন কি তা তিনিও উল্লেখ করেননি।
No comments:
Post a Comment
Never share any links or personal information. Keep your privacy strong.