Saturday, April 24, 2021

করোনা মহামারীতে বিশ্বে ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা

Author

 

করোনা মহামারীতে বিশ্বে ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা


করোনা ভাইরাস কি?

এটি এখন আর কারো অজানা নয়। বিশ্ব ব্যাপী আতঙ্কের নাম। করোনাভাইরাস জনিত রোগ (কোভিড -১৯) একটি সংক্রামক রোগ যা নতুন আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। ভাইরাসটি দ্বারা সংক্রামিত বেশিরভাগ মানুষ হালকা থেকে মাঝারি শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতায় ভুগেন এবং বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠেন। তবে, বয়স্ক ব্যক্তিরা এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, ডায়াবেটিস, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং ক্যান্সারের মতো অন্তর্নিহিত চিকিৎসা সমস্যায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেক ক্ষেত্রে মারাও যান।


Corona virus detection


ভেটেরিনারিয়ান কাদের বলা হয়?

অসুস্থ বা আহত প্রাণীদের চিকিৎসা করার যোগ্য, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত ব্যক্তি; একজন ভেটেরিনারি সার্জন। এক কথায়, প্রাণি চিকিৎসক। 

করোনা মহামারী: 

২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর, চীনের উড়ানের প্রদেশের হুবেই শহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। এখন অবধি প্রায় ২০০ টি দেশে কোভিড -১৯ এর সংক্রমণ হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা মহামারীতে ভেটেরিনারিয়ানের ভূমিকা:

কোভিড-১৯ মহামারী আজ যেখানে বিভীষিকা সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করা একটি চ্যালেঞ্জ, যা বিশ্বব্যাপী মানবকূল এবং প্রাণিকূলেকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করছে। এই আতঙ্কজনক পরিস্থিতি চলাকালীন, প্রাণি চিকিৎসকরা প্রাণিদের স্বাস্থ্য রক্ষা ও কল্যাণে ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। মহামারীটি জন-স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কার্যক্রমে প্রাণি চিকিৎসকের ভূমিকা যে কতখানি তা নিশ্চিতভাবেই টের পাইয়ে দিয়েছে। যা "One Health Program" ও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভেটেরিনারির প্রয়োজনীয়তা জাগিয়ে তোলে। গত বছরের শুরুর মাসগুলিতে বিশ্বব্যাপী লকডাউন সত্ত্বেও অধ্যবসায়, কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং অর্পিত উল্লেখযোগ্য দায়িত্বগুলি প্রাণি চিকিৎসকরা নিরপেক্ষভাবে সমাজের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রাণীর প্রতি তাদের আন্তরিক নিবেদনের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। যাতে প্রতিফলিত হয়েছে বিশ্বের জনগণের প্রতি তাদের পরিসেবা, ত্যাগ ও মহিমার অনন্য দৃষ্টান্ত।


One Health Program


"একটি জাতির মাহাত্ম্য এবং এর নৈতিক অগ্রগতি তার প্রাণিদের সাথে যেভাবে আচরণ করা হয় তার দ্বারা বিচার করা যেতে পারে।"

প্রাণি চিকিৎসকগণ পরীক্ষাগারে গবেষণা করা থেকে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা অবধি চিকিৎসা বিজ্ঞানকে সহায়তা করার প্রয়োজন ভিত্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমান মহামারীটি সমাধানের জন্য মানুষের চিকিৎসক, পরিবেশবিদ ও প্রাণি চিকিৎসক সকলের দক্ষতা ভাগ করে একত্রে কাজ করার সময় এসেছে। প্রাণি চিকিৎসকরা তাদের বহুবিধ দেশে প্রথম সারির কর্মী হিসাবে নিজেকে বিকশিত করেছেন এবং তারা তাদের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি সম্মিলিতভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। মানব স্বাস্থ্য রক্ষা় করতে প্রথমে প্রাণীস্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। কারণ, জুনোটিক ডিজিজের ( প্রাণি থেকে মানুষে ছড়ায়) প্রায় ৬০ ভাগ‌ই আসে প্রাণিকূল থেকে [ CDC ] প্রাণি চিকিৎসকরা মানুষের নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্তকরণে ভূমিকা রাখছে। অনেক ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্যানিটাইজার, পিপিই কিট এবং ভেন্টিলেটর সরবরাহ করে থাকে। কোভিড-১৯ এর বিস্তার পদ্ধতি নির্ধারণ করার জন্য ভেটেরিনারি এপিডেমিওলজিস্টরা জনস্বাস্থ্যের সাথে একযোগে কাজ করছে ।

কুকুর শনাক্ত করবে কোভিড-১৯; ভেটেরিনারিয়ান:

স্নিফার কুকুরকে রোগীদের কোভিড -১৯ শনাক্ত করতে শেখানো হচ্ছে, যা মানুষ এবং প্রাণী একসাথে কাজ করার এক অভিনব উদাহরণ। জাতীয় এবং আঞ্চলিক অঙ্গনে প্রাণিজ খাদ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং পরিদর্শন এজেন্সিগুলিতেও ভেটেরিনারিয়ানরা এই ক্রান্তিলগ্নে নিরলসের পরিচয় দিয়েছেন। এ ছাড়াও তারা ল্যাবরেটরি পশুর দায়িত্বে রয়েছেন, যেগুলি ওষুধ এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে, বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রয়োজনীয়।

ভেটেরিনারি মেডিকেল অফিসারের ভূমিকা:

গণপরিবহন বন্ধ ও সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকায় পুরো লকডাউন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সময়েও ভেটেরিনারি পেশাদাররা ভেটেরিনারি সেন্টারে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। ভেটেরিনারি মেডিক্যাল অফিসাররা স্যানিটাইজার, ফেস মাস্ক, গ্লাভস ইত্যাদির সীমিত প্রাপ্তির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে টিকা দেওয়া, চিকিৎসা দেওয়া, সচেতনতা সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করে চলেছে।মহামারী সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করার জন্য উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া পদ্ধতি, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করেছে।পরিবহন ব্যবস্থা অচল থাকায় পশুদের খাদ্য ও ঔষধ ঘাটতির কারণে বেশিরভাগ খামারে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা কৃষক ও খামারীদের সংকট সমাধানে সহায়তা করেছেন।

শিক্ষাবিদ এবং গবেষক হিসাবে ভেটেরিনারিয়ান:

বিশ্বব্যাপী মহামারী মোকাবেলার জন্য প্রাণি চিকিৎসকরা যেখানেই থাকুন না কেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরামর্শমূলক মতামত দিয়েছেন। ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ ল্যাবরেটরিতে স্যানিটাইজার তৈরি করতে এবং দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে বিতরণে নিজেকে নিযুক্ত রেখেছে। অনেক দেশে বর্তমানে ভেটেরিনারি ভার্চুয়াল ল্যাব চালু হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারিয়ান:

ক্রমবর্ধমান মহামারীটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলেছে কারণ কোভিড-১৯ মহামারীটি স্থানীয় এবং বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহের বাজারে সর্বনাশা প্রভাব ফেলেছে। লকডাউন, চাকরি হ্রাস, নিরাপত্তাহীনতা, হোটেল, রেস্তোঁরাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষক এবং খামারিরা অনিচ্ছাকৃতভাবে তাদের পশু ও প্রাণিজ় পণ্য সম্পর্কিত ব্যবসাগুলো হারাতে বসেছে। এর ফলে অবশ্যম্ভাবীভাবেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে। গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা মেটাতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি  অপ্রতুল হওয়ায় বিশ্বব্যাপী খাদ্য সুরক্ষা এখনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তবে, প্রাণি চিকিৎসকরা চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছেন এবং বৈশ্বিক খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মনোনিবেশ করেছেন।

ওয়ান হেল্থ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ভেটেরিনারিয়ান:

স্থানীয়, জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী কাজ করে মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য অর্জনের জন্য একটি সহযোগী ওয়ান হেলথ পন্থা -যা মানুষ, প্রাণী এবং আমাদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করে। চিকিৎসক, মহামারী বিশেষজ্ঞ বা বাস্তু বিশেষজ্ঞ হিসাবে সমস্ত ক্ষেত্রে প্রাণি চিকিৎসকগণ তাদের জ্ঞান ভাগ করে নিচ্ছেন। অসুস্থ পশুর চিকিৎসা করা এবং তাদের উপশম করা কেবলমাত্র প্রাণি চিকিৎসকের কাজ নয়, প্রাণি চিকিৎসকরা তাদের সুস্থ রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে, পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করে, তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, আচরণ এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া ছাড়াও অনেক কাজ করে থাকে।

পোষা প্রাণী ব্যবস্থাপনায় ভেটেরিনারিয়ান:

সাইকোনিউরোলজির মাধ্যমে এখন এটি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে স্ট্রেস, উদ্বেগ এবং হতাশা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে দিতে পারে যা স্বাস্থ্য খারাপের দিকে পরিচালিত করে। একটি পোষা প্রাণী মানুষের নিঃসঙ্গতা, হতাশাকে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। বর্তমান কোভিড-১৯ সময়ে পোষা প্রাণীদের ক্লিনিকাল পরিসেবার উচ্চ চাহিদা রয়েছে। একজন ভেটেরিনারিয়ান এখানে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে থাকেন।

ভেটেরিনারি টেলি-মেডিসিন পরিচালনায়: 

কোভিড-১৯ এর কঠোর লকডাউনেও ভেটেরিনারিয়ানরা থেমে ছিলো না। প্রাণিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই সংকটজনক মুহূর্তে টেলিফোনে সেবাদান চালিয়ে গেছে। বর্তমানে, ফ্রেশ দুধ ও ডিম সরবরাহ চলছে উপজেলায়, জেলায়।

আরো কিছু বিষয়ে ভেটেরিনারিয়ান অবদান রাখতে পারেন বলে আমি মনে করি:

  • জাতীয় এবং আঞ্চলিক ভেটেরিনারি নিয়ন্ত্রক এবং পরিদর্শন পরিষেবাগুলি জনস্বাস্থ্যের অখণ্ডতা পর্যবেক্ষণ করতে পারে
  • জনগণের জন্য খাদ্য সুরক্ষার গ্যারান্টি দিতে কেবল স্বাস্থ্যকর প্রাণী এবং তাদের উপজাতগুলি খাদ্য সরবরাহ করা
  • জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করা
  • প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যেমন একটি উল্লেখযোগ্য জনস্বাস্থ্য বা অর্থনৈতিক প্রভাব সহ রোগের বিরুদ্ধে টিকা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
  • অগ্রাধিকারভিত্তিতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। হোস্ট, এজেন্ট এবং লাইফ সাইকেল সম্পর্কে জানা।
  • আরও বিস্তার এড়াতে এই কার্যকলাপগুলির কাঠামোর মধ্যে যথাযথ আচরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রতিটি ব্যক্তির দায়িত্ব।
  • রোগ সংক্রমণের ভৌগলিক তথ্যগুলো নিরীক্ষণ ও অধ্যয়ন যাতে রোগগুলির মডেলিং এবং জীবাণুর গঠন পরিবর্তনের পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
  • পরিবেশগত সংক্রমণ অথবা জুনোটিক রোগ সংক্রমণকারী এজেন্টদের নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করে। 
  • সময়ের সাথে সংক্রামক এজেন্টগুলির বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন বিষয়ে তথ্য, উপাত্ত বিশ্লেষণ।
  • পোষা প্রাণী এবং উৎপাদনকারী প্রাণীদের মধ্যে স্যানিটারি নিয়ন্ত্রণ।
  • প্রাণী খাদ্য নিয়মিত পরিদর্শন এবং নিয়ন্ত্রণ।

অত‌এব, করোনা মোকাবেলাসহ অন্যান্য যেকোন মহামারী ঠেকাতে ও নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলায় বিশ্বে ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা সত্যিকার অর্থেই উল্লেখ করার মতো।

 বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট:

দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। সেদিন আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয় বাংলাদেশে ৩ জন করোনা রোগী শনাক্তের কথা। এরপর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে করোনার প্রকোপ। বর্তমানে মৃতের সংখ্যা দশ হাজারের উপরে। গতবছরের শেষার্ধে সংক্রমণহার উল্লেখযোগ্যহারে কমলেও এবছর মার্চ থেকে পুনরায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা মোকাবেলায় সামনের সারিতে কাজ করছেন ডাক্তার নার্সরা, পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ভেটেরিনারিয়ানরাও। সরকার অনুমোদিত করোনা শনাক্তকরণের সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবের উপযুক্ততা যাচাই, যন্ত্রপাতির সচলতা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে তৈরি করা ১৮ জনের এক্সপার্ট পুলের হয়ে কাজ করছেন চারজন ভেটেরিনারিয়ান। সরকারি তহবিলে অর্থ দিয়ে, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ, নার্সদের ফেসশিল্ড বিতরণ, গবেষণা ল্যাব থেকে আরটি-পিসিআর মেশিন অনুদান হিসেবে প্রদান, স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন সবার প্রয়োজনে।

ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে করোনায় নিজের অভিজ্ঞতা:

আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত যে, মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সুস্থ রেখেছেন। আমি ভাগ্যবান এই জন্য যে, করোনার মধ্যে বেশ কিছু ভালো কাজ করার সুযোগ হয়েছে। নিজ উদ্যোগে একটি বাজারে ( রাজার মোড়, সরিষাবাড়ী) দুইশত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ এবং সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করেছি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "হাসিমুখের" হয়ে হতদরিদ্রের আর্থিক সহায়তা ও শিশুদের হাত ধোয়া পদ্ধতি শিখিয়েছি। সেই সাথে গ্রামে প্রায় দুইশত প্রাণির চিকিৎসা বিনামূল্যে করেছি।  ইন্টার্নশিপ চলাকালীন সময়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হয়ে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পেরেছি। এই সংকটময় মুহুর্তে এইটুকু করতে পেরে আমি নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করি।

পরিশেষ, কোভিড-১৯ মহামারীর কাঠামোর মধ্যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ওআইই) এবং ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনও (ডাব্লুভিএ) যৌথভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য ভেটেরিনারি পেশার ভূমিকা এবং দায়িত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা মনে করেন, প্রাণি চিকিৎসকের কার্যক্রম যা খাদ্য সুরক্ষা, রোগ প্রতিরোধ ও জরুরি ব্যবস্থাপনার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি। সংক্ষেপে, ভেটেরিনারিয়ান হলো বিশেষ ধরনের বৈজ্ঞানিক মানুষ যারা কেবল বোবা প্রাণীদের জন্যই নয়, সামগ্রিকভাবে সমাজেরও যত্ন নেন। দুঃখের বিষয়, পূর্ববর্তী মহামারী গুলো যেমন, ব্রুসিলোসিস, যক্ষ্মা, অ্যানথ্রাক্স, ক্ষুরা রোগ এবং জলাতঙ্কের মতো রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করা সত্ত্বেও, বেশিরভাগ সরকারী প্রতিষ্ঠান এখনও এই প্রসঙ্গে প্রাণি চিকিৎসকের ভূমিকা সম্পর্কে নিশ্চিত নয়। সর্বোপরি, ভেটেরিনারিয়ানরা আসন্ন "বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস-২০২১" এর মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, করোনা মোকাবেলায় নিঃস্বার্থভাবে প্রাণিকূল, দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবে এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।

সেরা আর্টিকেল হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে, THE VET LOG ওয়েবসাইটে।



***

ফেরদৌস হাসান মিঠুন

ভেটেরিনারি সায়েন্স ( ইন্টার্ন )

Wednesday, April 14, 2021

গ্যালিলিও গ্যালিলি_ জহুরুল আলম সিদ্দিকী

 Book Summary_30

গ্যালিলিও গ্যালিলি

___জহুরুল আলম সিদ্দিকী



চরিত্র:

১. গ্যালিলিও গ্যালিলি: মহান বিজ্ঞানী, আধুনিক টেলিস্কোপের আবিষ্কারক।

২. ডিসিয়া: একমাত্র কন্যা ( গ্যালিলিও কে সবসময় প্রেরণা দিত বিজ্ঞানের কল্যাণে কাজ করতে) 

৩. অ্যাবিসেন: গ্যালিলিওর ছাত্র

৪. বিজ্ঞানী ব্রুনো

৫. লসিকাস: ব্রুনোর বাবা

৬. নেরিসা: ব্রুনোর বোন

৭. পোপ ব্যারন 

৮. পোপ ৮ম আরবান


কাহিনী সংক্ষেপ:


ইতালির পিসা শহর।

গ্যালিলিও তার আবিষ্কৃত শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে কোপার্নিকাসের তত্ত্ব, " সূর্য‌ই পৃথিবীর কেন্দ্র" পুনঃ প্রমাণ করেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। এই মহান সত্যটি গ্যালিলিও সিলভিয়াতি (ছদ্মনাম) চরিত্রে প্রকাশ করেন, " ডায়ালগ কনসার্নিং দি টু চিফ সিস্টেমস অব দি ওয়ার্ল্ড"। ভ্যাটিকান সিটির চার্চ গ্যালিলিওর প্রকাশিত ব‌ইয়ের বিরুদ্ধে ৩ টি অভিযোগ আনে।

১. ধর্ম ত্যাগী

২. নাস্তিক কোপার্নিকাসের সূর্য কেন্দ্রিক ধারণার পুনঃপ্রবর্তন

৩. চার্জ তথা বাইবেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

অভিযোগ বলে গ্যালিলিওর বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির আদেশ দেয় পোপ ব্যারন। হয় তত্ত্ব ফিরিয়ে নিতে হবে, না হয় শাস্তি ভোগ করতে হবে। এরিস্টটলের লেখা, " অন দি হেভেন" ব‌ইয়ে পৃথিবী বৃত্তাকার ও স্থির বলা হয়েছিল।

বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে চার্চের বিবাদ পূর্বে থেকেই। সত্য প্রমাণের জন্য লুসিকাসের পুত্র বিজ্ঞানী ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে ও কন্যা নেরিসাকে চার্চে বন্দি করে রাখে। রজার বেকনের‌ও এক‌ই দশা হয়েছিল। কন্যা নেরিসার মুক্তির জন্য লুসিকাস চার্চের আদেশে গ্যালিলিওকে বুঝাতে বলে। তার বক্তব্য ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে পারলে তার কন্যাকে মুক্তি দেয়া হবে।

কন্যা, ডিসিয়া ও ছাত্র, অ্যাবিসেনের মধ্যে ভালোলাগা সৃষ্টি হয়। গ্যালিলিওকে চার্চের বিরুদ্ধে যাওয়ার অতীত ইতিহাস দেখে ভয় দেখানো হয়।

শুধুমাত্র কন্যার বিপদের কথা ভেবে বাধ্য হয়ে গ্যালিলিও তার চিরন্তন সত্য আবিষ্কারের প্রমাণ সম্বলিত ব‌ইটি ভুল / নিজের বক্তব্য ফিরিয়ে নেয়। এর কারণ দুটো-

১. হয় একমাত্র কন্যার প্রতি ভালোবাসা থেকেই গ্যালিলিও সত্য প্রকাশে পিছপা হয়।

২. নতুবা, তিনি বুঝেছিলেন, বিজ্ঞানের কল্যাণে তাকে আর‌ও কিছুদিন বেঁচে থাকতে হবে।

চার্চ যাতে ব‌ইটি ধ্বংস না করে ফেলে এজন্য সেটি অ্যাবিসেনকে লুকিয়ে রাখতে বলে। গ্যালিলিও পরে আরও দুটো ব‌ই লিখে যান, তাতে পূর্বের কথাই সাংকেতিকভাবে লিখে যান। বর্তমানে তার লিখিত ৩ টি ব‌ইয়ের মূল কপিই, ভ্যাটিকান সিটির আর্কাইভ ল্যাবরেটরিতে সংরক্ষিত আছে।


©Mithun


Ferdous Hasan Mithun

How Will You Isolate and Characterise Salmonella spp. from Beef?

Isolation and Molecular Characterization of Salmonella spp. from Beef. Author:  Ferdous Hasan Mithun* Introduction: Innumberable foodborne z...