Book Review : (07)
#দত্তা
____কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
# সমাজের করুণ দৃশ্যগুলো অকপটে দর্পনের মতো পাঠকের সামনে বর্ণনা করে গেছেন। বইটি সাধু ভাষায় রচিত হলেও বুঝতে কোন সমস্যা হয় না। এখানে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তিন বাল্য বন্ধুর শেষ পরিণতি ও তাদের সন্তানদের মধ্যকার সম্পর্কের দৃশ্য।
#চরিত্র:
১.বনমালী:( মেয়ে - বিজয়া) ব্রাহ্মণ, জমিদারী, মেয়ে বেশ সুশ্রী ও ভদ্র।
২.জগদ্বীশ:(ছেলে- নরেন) ; ছেলে ডাক্তার ;ভদ্র, সুদর্শন, পরহিতৈষী।
৩. রাসবিহারী( ছেলে- বিলাসবাবু) ; স্বার্থান্বেষী, লোভী, ধূর্ত, ভনিতা ; জাতিতে কৈবর্ত্য।
৪.নলীনী: দয়ালের ভগিনী
৫. দয়াল: প্রাচীন আচার্য ; ভালো মানুষ
৬.কালিপদ: দারোয়ান
৭.পরেশ ও তার মা
৮. ভৃত্য ও কর্মচারী
## বনমালী, জগদ্বীশ,রাসবিহারী প্রাণের বন্ধু। একসাথে স্কুলে যায়। জীবনেও আলাদা হবে না, প্রতীজ্ঞা করে। কিন্তু বড় হলে সেই কথা আর থাকে না। জগদ্বীশ মদ, জোয়ায় স্বর্বস্ব হারায়। নিজের বাড়িটাও ঋণের দায়ে জব্দ হয়। ছেলেকে বিলেত হতে ডাক্তারী পড়ায়। বনমালী মারা যাওয়ার সময় বিজয়াকে নরেনকে বিয়ে করতে বলে যায় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী। দেনার দায়ে নরেনের বাবার স্বর্বস্ব রাসবিহারীর কুপ্রচেষ্টায় দখল করে সেখানে ব্রাহ্মমন্দির বানায় বিলাস বাবু। এতদিন রাসবিহারী বনমালীর জমিদারী দেখার সুবাদে প্রজার উপর অনেক অন্যায় করেছে, কর্তৃত্ব দেখিয়েছে। গুরুজন বলে বিজয়া তাকে কিছু বলে না। বাড়ির দারোয়ান, আয়ার সাথে কর্তৃত্ব করে চলত। বিলাস সব জায়গায় অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ও রাগ দেখালে ধূর্ত রাসবিহারী তাকে শান্ত করে মিষ্টিবানী শুনিয়ে দেয়। পরেশ ও দয়ালের স্ত্রীর বসন্তে ডা. নরেন চিকিৎসা করে। একদিন বিজয়া অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা করতে গেলে রাসবিহারী,বিলাস অপমান করে দেয়। বিজয়া সব বুঝেও কিছু বলতে পারে না। ইতিমধ্যে সে নরেনকে ভালোবেসে ফেলেছে, বাড়িতে আসলে না খেয়ে যেতে দেয় না। এক রাত আত্মীয় হয়ে ছিল বলে অনেক অপবাদ সহ্য করতে হয়। চতুর রাসবিহারী এক অনুষ্ঠানে বিজয়ার অনুমতি না নিয়েই তার সাথে বিলাসের বিয়ের কথা ঘোষনা করে দেয়, সামনের পূর্ণিমাকে লগ্ন ঠিক করে দেয়। বিজয়া ভদ্র মেয়ে বলে প্রতিবাদ করতে পারে না। সব শুনে নরেন কম আসে এখন। নদীর ধার দিয়ে হাটার সময় দয়ালের সাথে এসব শুনে তার বাড়িতে গিয়ে নরেন কে রাতে দেখে তাকে ভুল বুঝে ও তখনই তার সাথে কথা না বলেই ফিরে আসে। রাসবিহারী বিয়ের রেজিস্ট্রির চিঠি নিয়ে আসে সাইন করার জন্য। বিজয়ার কাছে ক্ষোভে তখন বিলাসকেই কম অপরাধী মনে হয়। তাই সে রাগে সাইন করে দেয়। পরের দিন নরেন আসে। দয়াল তার ভগিনী নলিনীর কাছে এসব শুনে সেও আসে। বিজয় ভুল বুঝে দয়ালকে ধরে কাঁদতে থাকে, সে যে অন্যকে কথা দিয়ে ফেলেছে। বিয়ের আর দুই দিন বাকি। রাসবিহারী বাড়িতে রীতিমতো আয়োজন করছে, নিমন্ত্রণও জানানো হয়ে গেছে। বিকালে দয়াল এসে বিজয়াকে দাওয়াত করে তার বাড়িতে, পরের দিন পালকী আসবে বলে যায়। রাসবিহারী কেও আমন্ত্রণ করে যায়। পরের দিন বিজয়া দয়ালের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হযে় দেখে বিয়ের আয়োজন চলছে। দয়াল এসে তাকে তৈরী হতে বলে যায়, আর বলে নলিনী তার সব ভুল ধরিয়ে দিয়েছে। মন থেকে বিলাসের বিয়েতে রাজি না তাই সে স্বীকৃতি কবুল হয় নাই। নরেন বিজয়াকে সাজানোর ভার নলিনী কে দেয়। যথারীতি বিয়ে সম্পন্ন হলো। এমন সময় রাসবিহারী এসে এমন কাণ্ড দেখে আকাশ থেকে পড়ে। দয়াল তাকে বিয়ের খাবার খেয়ে যেতে বলে। রাগে,স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে গদগদ করতে করতে বেরিয়ে যায় সে।
©Mithun
No comments:
Post a Comment
Never share any links or personal information. Keep your privacy strong.