#Book_Summery:(23)
#মধ্যাহ্ন
___হুমায়ূন আহমেদ
#জনপ্রিয়_ঔপন্যাসিক_হুমায়ূন_আহমেদের_স্মরণে।
## দুই খন্ডের অত্যন্ত জনপ্রিয় উপন্যাস। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ থেকে শুরু করে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালের ভারতবর্ষ ভাগ পর্যন্ত অনেক অজানা বিষয়ই তুলে এনেছেন। তৎকালীন সমাজের চিত্রের ধারণা পাওয়া যায়।
#চরিত্র:
১.হরিচরণ সাহা: পাটের আড়ৎ। অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের ভালো মানুষ। ( মৃত ছোট মেয়ে শিউলি )
২.শশাঙ্ক পাল: রাজা, সোনাদিয়া, বান্ধবপুর।
৩.জহির: সুলেমান ও জুলেখার পুত্র। উপন্যাসের মূল চরিত্রে।
৪.মাওলানা ইদ্রিস: ইমাম
৫.ধনুশেখ: খান বাহাদুর : মেয়ের নাম আতর।
৬.জীবন লাল চক্রবর্তী (মফিজ):বিপ্লবী
৭.শশী মাস্টার: বিপ্লবী
৮.আবদুল করিম: ইমাম
৯.উকিল মুন্সী:গায়ক
১০.লাবুসের মা : তার বৌ
১১.ন্যায় রত্ন রামনিধি
১২.অম্ভিকা ভট্টাচার্য্য
১৩.হাদিস উদ্দিন
আরও অনেক পার্শ্বচরিত্র আছে।
#সংক্ষিপ্ত_কাহিনী:
বান্ধবপুর গ্রামে হিন্দু-মুসলিমের বাস। স্ত্রী-সন্তানহীন পাটের আড়ৎদার হরিচরণ, খাজনা দিতে গিয়ে দেওলিয়া হয়ে পড়া শশাঙ্ক পালের জমিদারি কিনে নেয়। বেপর্দা হয়ে পড়া জহিরের মা জুলেখাকে তালাক দিলে তার স্থান হয় রঙ্গিলা নটি বাড়ীতে। দয়াবান হরিচরণের কৃপায় ধনুশেখ লঞ্চের টিকিট কাউন্টারের চাকরি থেকে একেবারে লঞ্চের মালিক হয়ে বসে। শশাঙ্ক পাল, ধনুশেখ রঙ্গিলা বাড়ীতে যায় আয়েশ করতে। জুলেখা থেকে চান বিবি হয়ে যাওয়া মহিলাটি প্রণয়ী হয়ে উঠে। সুরেলা কন্ঠে গান গায়, আনন্দ দেয়। আল্লাহ ভীরু মাওলানা ইদ্রিস মসজিদের ইমাম থেকে ধীরে ধীরে হাফেজ হয়ে উঠে। একদিন এই ইদ্রিস ই জুলেখা কে বিয়ে করে। এক কন্যা সন্তান হলে জুলেখা তা ফেলে কলকাতা চলে যায়, গান গাইতে। উকিল মুন্সীর গান, কাজী নজরুল ইসলামের কাছে থেকে শেখা গান গেয়ে রিতিমত বিখ্যাত হয়ে যায়। ইমাম ইদ্রিস বেশ্যাকে বিয়ে করায় সমাজচ্যুত হয়। নতুন ইমাম আ.করিম। হরিচরণ মুসলমান সন্তানকে কুলে নেয়া জাত গেলে ন্যায় রত্ন রামনিধিকে সমাজচ্যুত করে। অনেক দান, মানুষের মঙ্গল করে হরিচরণ সাধু পুরুষ হয়ে মারা যায়। তার সমস্ত জমিদারী লিখে দিয়ে যায় পুত্র হিসেবে স্বীকার করা লাবুস/জহিরকে। জহির তা জনকল্যাণে ব্যয় করে। দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে লঙ্গরখানা দেয়। তাতে হিন্দু মুসলিম একসাথে বসে খাবার খায়। দুই বিপ্লবী, শশী মাস্টার ও জীবনলাল, বান্ধবপুরে এসে আত্মগোপন করে। ধনুশেখ শশী মাস্টারকে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টায় ইংরেজদের কাছে থেকে খান সাহেব ও পরে খান বাহাদুর টাইটেল পায়। হিন্দু বিদ্বেষী ধনুশেখ হিন্দুদের শাস্তি দেয়। মুসলিম বিদ্বেষী অম্ভিকা ভট্টাচার্য্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। পায়ে পচন ধরলে পা কাটা ধনুশেখ হয়ে পড়ে। পালকি দিয়ে চলতে হয়। ইদ্রিসকে সমাজচ্যুত করায় লাবুস ইমাম করিমের লুঙ্গি খুলে নেয়। এই অপরাধের শাস্তি দিতে বৌয়ের ১০০ টাকা চুরি করে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে খুন করাতে চায়। ফাঁস হয়ে গেলে বৌকে তালাক দিলে এক ঠেঙ্গা ধনুশেখ হিল্লাবিয়ে করে, শরিফাকে। তা থেকে পালিয়ে গেলে মাঝিদের খপ্পরে সম্ভ্রম হারিয়ে তারও স্থান হয় রঙ্গিলা বাড়ীতে। করিম পাগল হয়ে যায়। শেষে তারা একসাথে দূরে চলে যায়, আতরের শ্বশুর বাড়িতে। সেখানেই তারা বাকি জীবন কাটায়। দেশ বিভাগের সময় বান্ধবপুর হিন্দুদের মধ্যে পড়ে। এসময় বহু মুসলমান প্রাণ হারায়।
#ইতিহাস_সম্পর্কিত:
*বিশাল ভারতবর্ষ পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ডিস্ট্রিক্ট মেজিস্ট্রেট খাজা সলিমুল্লাহ প্রস্তাব পাঠায় বঙ্গভঙ্গের। ১৯০৫ সালে তা কার্যকর। হিন্দুরা তা মেনে নিতে পারছিল না। ঢাকা রাজধানী ও ১৯১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে হিন্দুরা এর বিরোধিতা করে। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথও ছিলেন। আন্দোলনের মুখে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই খুশিতে রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান করেন। প্রতিষ্ঠা করেন "শান্তি নিকেতন"। তাতে যোগ দেন শৈলজারঞ্জন।
*মুক্তাগাছার জমিদার: শশীকান্ত আচার্য। শশী লজ প্রতিষ্ঠা করেন।
*গৌরিপুরের মহারাজ: ব্রজেন্দ্র রায় চৌধুরী
*কেন্দুয়ার আটারি বাড়ির জমিদার- প্রমোদ রায় চৌধুরী
*রুশ বিপ্লবের পূর্বে জারতন্ত্রের বিরুদ্ধে "মা" উপন্যাসটি লেখা শুরু করেন ম্যাক্সিম গোর্কি।
*নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস: ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিপ্লবের ডাক দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের অনেক সেনা হিটলার বন্দী করে। নেতাজী তাকে প্রস্তাব দেয়, যদি সে সৈন্যদের ছেড়ে দেয় তাহলে সে তাদের একত্রিত করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বে। হিটলার নেতাজীর উদ্দেশ্যের সাথে মিল থাকায় তাকে সাহায্য করতে রাজি হয়।
*মোহনসিং: যুদ্ধের সময় জাপানের হাতে বন্দী ছিল ৪৫০০০ ভারতীয় সেনা। মোহনসিংও একই প্রস্তাব দিলে জাপান তাদের মুক্তি দেয়। মোহনসিং তাদের নিয়ে গঠন করে আজাদ হিন্দ বাহিনী।
*জার্মান সেনারা রুশদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে। লেনিনগ্রাদ অবরুদ্ধ। বুভুক্ষু, বিদ্যুৎ নেই, শিশু খাদ্য শেষ। সপ্তাহে প্রতি শিশুর জন্য ছয় গ্রাম চিনি বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এমন সময় ইয়ান র নামে এক জিপসী হিটলারকে ভবিষ্যৎবানী শুনায়, জার্মান বাহিনীর উপর বরফ পড়ছে। তারা পরাজিত হবে।
৬ নভেম্বর ১৯৪২, লাগোদা হ্রদ তোষারপাতে জমে শক্ত হয়। ২৭ দিনে জাভেরী থেকে ২০০ মাইল রাস্তা বানানো হয়। ৬ ডিসেম্বর রুশরা জার্মানদের হাত থেকে তিখধিন রেলস্টেশন দখল করে নেয়। জার্মানদের প্রথম পরাজয় শুরু হয়।
*হিটলার তার বাহিনীকে এমনভাবে তৈরি করেছিলেন যারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করতে পারে না। মৃত্যু হলেও আত্মসমর্পণ করবে না। কিন্তু, শেষের দিকে এর ব্যতীক্রম হয়েছিল। মিত্র বাহিনী স্ট্যালিন গ্রাদ অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। ফিল্ডমার্শাল পাউলাস ৯১০০০ সৈন্য নিয়ে আত্মসমর্পণ করে বসে।
* হিটলার ইহুদি বিদ্বেষী ছিলেন। উগ্রবাদী এই শাসক দেশ প্রেমের এক জলন্ত দৃষ্টান্ত। তার বান্ধবী ইভা ব্রাউন একজন ইহুদী। পরাজয়ের শেষ দিন, ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করেন। শুধুমাত্র এই জন্য যে, কেউ যেন না বলতে পারে ইভা কে তার পরিচারিকা/রক্ষীতা বলে অপবাদ দিতে না পারে। বিয়ের পরেই আত্মহত্যা করে।
*আইনস্টাইন ই পারমানবিক শক্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রথম উপলব্ধি করতে পারেন।
*৬ আগস্ট ১৯৪৫: জাপানের দাপট কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের পল টিবেটিস বৈমানিক এনোলা গে বিমান চালিয়ে নিয়ে যায়। লিটল বয়ের মারণাঘাতে তৎক্ষণাৎ ৬০০০০ নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারায়। পরে সহ সর্বমোট ১৪০০০০ মারা মানুষ প্রাণ হারায়।
* কাজী নজরুল ইসলাম: রবীন্দ্রনাথের দেয়া নাম রেডিও, আকাশবাণীতে কাজ করেন। সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন।
✓ বেনুকা , দোলনচাঁপা তার গানের দুটি রাগিনী।
✓ শেষ বয়সে বাকশক্তি হারিয়ে মারা যান। ঢাবি, মসজিদের পাশে জাতীয় কবির মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
*শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন: দুর্ভিক্ষের সময় কলকাতার এক ডাস্টবিনের পাশে এক নারী, শিশু, দুই কাক একে বিখ্যাত হয়ে যান। তার প্রথম বিক্রিত একটা কাকের ছবি যেটা কিনা তার আঁকা ছিল না। মাওলানা ইদ্রিসের চরিত্রের রূপক মানুষটির। জয়নুল আবেদিন তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন মাত্র।
* হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা: বোম্বের মালাবাগ হিল, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও মহাত্মা গান্ধীর বৈঠক। গান্ধীর প্রস্তাবে জিন্নাহর অসম্মতি। খেলাফত আন্দোলন শুরু।
ক্লথ ব্যাটেনি ভারতবর্ষ ভাগের চিঠি প্রেরণ।
©Mithun