দেশে প্রথম প্রাণি হত্যার অপরাধে আদালতে শাস্তি
সিদ্দিক নামে এক ব্যক্তি দুই মা ও ১৪ টি কুকুর ছানাকে মেরে মাটিতে পুঁতে রাখে। প্রাণির প্রতি এমন নির্মমতা ঘৃণা ছাড়া কিছুই কিছুই আসে না। আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদন্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও সাতদিন জেলে খাটতে হবে তাকে।
মূলত এই ধরনের সমস্যাগুলো গ্রামের কিছু পাতি নেতারাই সমাধান করে ফেলেন। বাদী বিবাদীর মধ্যে যার কাছ থেকে কিছু হাত কড়ি বেশি পায় নামাতে পারে তার দিকেই শুয়ে পড়ে।
এসব নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড যারা করে তারা পার পেয়ে যায়।
বাংলাদেশে প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুরতা আইন-১৯২০ সালের ৭ ধারাতে এখনও বিচারকার্য চলছে। আমাদের কি এ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত নয়?
অবাক হতে হচ্ছে আইন করে রাখা হয়েছে। তার প্রয়োগ হচ্ছে একশ বছর পর। তবুও ধন্যবাদ জানাই আদালতকে তাও তো একটা ব্যবস্থা নিয়েছেন।
তবে এই শাস্তিই কি যথেষ্ট একজনকে সংশোধনের জন্য? যেখানে কেনিয়া আইন করছে অকারণে প্রাণি হত্যায় সরাসরি মৃত্যুদন্ড।
আর আমাদের দেশে ১৬ টি প্রাণির জীবনের মূল্য মাত্র ২০০ টাকা! ছয়মাস কারাদণ্ড হলেও একসপ্তাহ পরই দেখা যাবে বাড়ি এসে দিব্যি হাওয়া খাচ্ছে।
যেই জন্য শাস্তি তা কি এতে মনে থাকবে?
আমাদের দেশের অ্যাক্ট গুলোকে আরও কঠিন করা দরকার ও যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।
আমাদের দেশে প্রাণি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু নেই। যখন পথে ঘাটে এইসব প্রাণির আধিক্য দেখা যায়, রোগ সংক্রমণের প্রতিরোধে নির্বিচারে হত্যা করে ট্রাক বোঝাই করে তাদের সৎকার সারা হয়। আমাদের নিয়মই এটা অবাদে বংশবিস্তার করো আর যখন ব্যাঙের মতো বংশ বাড়তেই থাকে তখন চলে গলাকাটা। কেন উপজেলাতে না হোক প্রতি জেলাতে তো অন্তত একটা করে সরকারী উদ্যোগে স্ট্রীট এনিমেল দের ব্যবস্থাপনার কেন্দ্র রাখা যেতে পারে। দেশে কি ভেটেরিনারিয়ানের অভাব? না অভাব না। অভাব তাদের কাজে লাগানোর ব্যবস্থাগুলো। সমস্ত উপজেলায় ১/২ জন ভেটেরিনারিয়ান কি করবে আর!
দুঃখের সাথেই বলতে হয়, দেশের প্রাণি সেক্টরটা খুবই অবহেলিত। যেখানের দেশের সিংহভাগ প্রাণিজ আমিষের যোগান দিচ্ছে লাইভস্টক সেক্টর।
মাঝে মধ্যে দু একটা নজির সৃষ্টি করে হৈহুল্লোড় করার চেয়ে প্রতিনিয়ত আমাদের বদলানো উচিত। আমাদের হীনতা ঝেড়ে ফেলে একসাথে বাঁচার আনন্দে মেতে উঠা উচিত।
আসুন আমরা প্রাণিদের প্রতি দয়াপরবশ হই। এই পৃথিবীতে সকলেরই বসবাসের সমান অধিকার রয়েছে। শ্রেষ্ঠ জীব হয়ে নিজেদের ছোট না করি।
No comments:
Post a Comment
Never share any links or personal information. Keep your privacy strong.